বাধা কাটলো কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে

রায়ের কপির অপেক্ষা

কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আইনগত আর কোনো বাধা নেই। হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্সের দায়ের করা আবেদন দ্বিতীয় দফায় খারিজ করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) শুনানি শেষে উচ্ছেদ কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ চেয়ে কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স যে আপিল করে, তা নামঞ্জুর করে দিয়েছেন আদালত।

এর আগে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি চেম্বার আদালতে আবেদন করে কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স। তখন চেম্বার বিচারপতি স্থাপনার ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা রাখার নির্দেশ দেন। এ ধারাবাহিকতায় ১৫ এপ্রিল স্থাপনা উচ্ছেদ বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের করা আবেদন খারিজ করে দেন চার সদস্যের আপিল বিভাগ।

পরে পুনরায় কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল করে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স। এদিকে, হাইকোর্টে শুনানি শেষে রায় বহাল রেখে আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।

আদালতে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস। জেলা প্রশাসকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী মনজিল মোরশেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, একই বিষয়ের উপর বারবার আদালতে আমাদেরকে সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। আদালত যখন একবার নির্দেশ দিয়েই দিয়েছেন, সেটা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতার কারণে এ সুযোগটা পাওয়া যাচ্ছে। এখানে আমি মনে করি, আজকের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, নদীর জায়গা কেউ দখল করতে পারবে না। এক্ষেত্রে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

উচ্ছেদ অভিযান কার্যকর প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, এখনও তো অর্ডার হাতে আসেনি। রায়ের অর্ডার হাতে পেলেই মাঠে নামব।

কর্ণফুলী নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে প্রায় ৯ বছর আগে হাইকোর্টে রিট করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। এর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট কয়েক দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, বিষয়টি চলমান পর্যবেক্ষণে থাকবে।

এরপর চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন সেখানে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায়, যা পাঁচদিন পর হঠাৎ থেমে যায়। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে এইচআরপিবি ৭ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি আবেদন করে। এর শুনানি নিয়ে ৯ এপ্রিল হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা অবিলম্বে অপসারণ করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। অপসারণের আদেশ বাস্তবায়ন করে ৩০ দিনের মধ্যে বন্দরের চেয়ারম্যানকে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়। পরবর্তী আদেশের জন্য ১৯ মে দিন ধার্য হয়।

এসআর/সিআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!