বাজার দর বেশি কৃষক পরিবার খুঁশি : সীতাকুন্ডে গ্রীষ্মকালীন শিমের উৎপাদনে কৃষকের সাফল্য

শেখ সালাউদ্দীন, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ::
সীতাকুন্ডের প্রতিবছর শীত মৌসুমে উপজেলার সাগরের বেড়িবাধ থেকে শুরু করে মহাসড়কের রাস্তার উভয় পাশে এবং পাহাড়ি ভূমি, রেল লাইনের উভয় পাশে সারি সারি শিমের আবাদ হলেও এখন গ্রীষ্মকালেও  সু-স্বাদু ইপসা জাতের (রুপবান)শিমের আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে বেশি। তবে এ শিম ইপসা জাতের হলেও এখানকার স্থানীয়রা এ শিমকে রুপবান শিম হিসেবে জানে।

shim pic 3.jpg,,,,,,,,,,,,

 

শিমের উৎপাদন বৃদ্ধিতে শিম চাষে এবার লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। ফলে এ উপজেলার প্রায় ৪৫জন কৃষক পরিবার পাইকারীতে শিম বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছে।

 

সরেজমিন শিম ক্ষেত গুলো ঘুরে ও কৃষকদের  সাথে আলাপকালে জানা য়ায়, শীতের মৌসুমের মত তারা গ্রীষ্মকালেও শিম চাষে অধিক হারে লাভবান হচ্ছে। এমনি একজন কৃষক ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন টেরিয়াইল ব্লকের বড়দারোগার হাট টেরিয়াইল গ্রামের কৃষক মোঃ আলমগীর জানান, তিনি গ্রীষ্মের এমন সময়ে অন্যান্য সবজির চাষ করতেন। বর্তমানে এ শিমের মূল্য বেশি ও ভাল ফলনের কারনে ১ একর জমিতে ইপসা জাতের (রুপবান শিমের আবাদ করেছেন।

 

বৈশাখের প্রথম সপ্তাহে বীজবোপন করেন। বাঁশের কন্সি ও শ্রমিক সহ এপর্যন্ত খরচ পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। তিনি বলেন,বর্তমানে প্রথম অবস্থায় ৯০থেকে ১০০টাকা কেজি হিসেবে পাইকারীতে শিম বিক্রি করেছেন প্রায় ৪ হাজার টাকা। বাজার দর এ অবস্থায় থাকলে প্রায় ৭০থেকে ৮০হাজার টাকার মত বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি ধারণা করছেন। তিনি আরো বলেন,কৃষি অফিসের পরামর্শে শিমের আবাদ করতে আগ্রহ প্রকাশ করি আমরা।

 

এ ব্লকে দায়ীত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্ত পিপাষ কান্তি চৌধুরী এবিষয়ে বলেন, উক্ত ব্লকে উপেক্ষাকৃত উচুঁ জমিগুলোতে কৃষকরা পূর্বে ধানসহ নানারকম সবজির চাষ করতেন। বর্তমানে ঐসব জমিগুলোতে তারা গ্রীষ্মকালীন শিমের আবাদ করেছেন। শিমের মূল্য ভাল বলে এখানকার প্রায় ৩৫জন কৃষক  ৫ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিমের আবাদ করেন। শিমের মুল্য বেশি বলে কৃষক পরিবার আস্তে আস্তে গ্রীষ্মকালীন শিমের আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

 

চলতি মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রীষ্মকালীন শিমের আবাদের কথা শুনে পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামগঞ্জের হাট বাজার থেকে পাকারীতে শিম ক্রয়করে বিভিন্ন জেলা উপজেলার শহর গুলোতে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন এ উপজেলায় আগত পাইকার।

 

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা খাঁন মোহাম্মদ সালেহীন ও উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্ত সুভাষ চন্দ্রনাথ বলেন, উপজেলায় চাষী পর্যায়ে গ্রীষ্মকালীন শিমের আবাদ করা ইহা অত্যান্ত ভাল একটি উদ্যোগ। শিম চাষকে জনপ্রিয় করার জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা উদ্বোদ্ধ করনের মাধ্যমে এ কর্মসুচী চালু রেখেছেন।

 

মৌসুমে এ শিমের চাষে অধিকহারে লাভবান হবে কৃষক পরিবার। শিম চাষে জৈব বালাই নাশক তথাshim chas s 1 ফেরোমান ফাঁদ ব্যবহার আমাদের পরিক্ষামুলক কার্যক্রম এর একটি অংশ। ফেরোমান ফাঁদ বিতরন এবং উদ্বোদ্ধ করন কার্যক্রম চলছে পুরো উপজেলা ব্যাপী। তা ছাড়া শিম চাষে সকল রকম তথ্যগত সহায়তা কৃষকদের দেয়া হচ্ছে। আশাকরা যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন এ শিম  অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করবে।

 

এদিকে পৌরসভাধীন এলাকার মৌলভী পাড়ার কৃষক আখেরের জামান,মদন উল্ল্যা,নুলুয়া পাড়ার কৃষক ইব্রাহীম,এয়াকুব নগরের মজিবুল হক,শামছুন নাহার ও আবুল মনছুরসহ ১০জন কৃষক এ শিমের আবাদ করেছে বলে জানিয়েছেন এয়াকুবনগর ব্লকে দায়ীত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহ্ আলম। তিনি বলেন,এ ব্লকের পাহাড়ি এলাকা ও পাহাড়ের পাদদেশে বিস্তৃতভাবে কৃষকরা লাভজনক সবজি গ্রীষ্মকালীন শিমের আবাদ করেছেন। তবে এসব জায়গা গুলোতে আগে অন্যান্য সবজির চাষ হতো। বর্তমানে অধিক লাভের আশায় কৃষক পরিবার ইপসা জাতের(রুপবান শিমের আবাদ করেছেন তারা।

 

সীতাকুন্ড উপজেলা কৃষি অফিসার সুশান্ত সাহা দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গ্রীষ্মকালীন শিম  পরিক্ষা মুলকভাবে সর্বপ্রতম আবাদ শুরুহয় ২০১০ সাল থেকে। তবে গতবছর ২০১৫ সালে এ শিমের চাষ হয় ৫ হেক্টরে। প্রতি হেক্টরে এর উৎপাদন ধরা হয়ে ছিল তখন ৫ মেক্ট্রিক টন। বর্তমানে ২০১৬ সালে তা বেড়ে চলতি বছরের ২০১৬ সালে এ শিমের আবাদ দাড়িয়েছে ৭হেক্টরে। এর উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৬ মেক্ট্রিক টন। আর কৃষকের সংখ্যা হচ্ছে ৪৫জন। উপজেলার বড়দারোগার হাট,এয়াকুবনগর,মৌলভী পাড়া,মহাদেবপুর ও বাড়বকুন্ডে এ লাভজনক গ্রীষ্মকালীন ইপসা জাতের(রুপবান) শিমের আবাদ হয়েছে।

 

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!