বাকলিয়ায় স্ত্রীর গলা কেটে মৃত ভেবে পালিয়ে যান স্বামী

৯৯৯-এ ফোন পেয়ে উদ্ধার করলো পুলিশ

যৌতুকের টাকা না পেয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে দিয়েই মৃত ভেবে পালিয়ে যান স্বামী। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এমন কাণ্ড ঘটানো সেই স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা পুলিশ।

শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে চট্টগ্রামের সৈয়দ শাহ রোডে মেয়ের বাবার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে।

ওইদিন সকালে শ্বশুরবাড়িতে এসে দাবি করা যৌতুকের টাকা না পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রী লিপা বেগমের (১৯) গলা কেটে পালিয়ে যান স্বামী জুয়েল মিয়া (২৪)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছুদিন আগে স্বামী জুয়েল মিয়া যৌতুকের জন্য নির্যাতন করলে নগরীর সৈয়দ শাহ রোডে বাবার বাড়িতে চলে আসেন লিপা বেগম। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে স্বামী জুয়েল মিয়া লিপার বাড়িতে এসে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয়। না পেয়ে ছুরি দিয়ে লিপা বেগমের গলা কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে চিৎকার শুনে স্বজনরা এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন লিপাকে। এ সময় তারা দ্রুত জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানালে বাকলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লিপা বেগমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়।

গ্রেফতার হওয়া জুয়েল মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানা দেউঘর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাবিয়া নগর বেলায়েত হুজুর বাড়ির মো. নুরুল ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

লিপা বেগমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আট মাস আগে জুয়েল মিয়ার সঙ্গে লিপা বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরই বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে নির্যাতন শুরু করেন জুয়েল। লিপা বেগম তার বাবার আর্থিক দুরবস্থার কথা বলে টাকা আনতে অপারগতা জানালে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরপরও সংসারের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করে সংসার করে আসছিলেন তিনি। পরে নির্যাতনের বিষয়টি পরিবারকে জানালে স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকে স্ত্রীকে আর নির্যাতন করবে না— সবার সামনে এমন প্রতিজ্ঞা করেন জুয়েল মিয়া। কিন্তু এরপর আবার নির্যাতন শুরু করলে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন লিপা।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে স্বামী পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ খবর দিলে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম নারীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ৩৪নং ওয়ার্ডে ভর্তি করি।

তিনি আরও জানান, আমরা ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে স্বামী জুয়েল মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তার বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে কারাগারে পাঠাই।

এএন/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!