বাকলিয়ায় আওয়ামীলীগ ঠেকাতে বিএনপি প্রার্থীর ভাই আওয়ামীলীগ প্রার্থী!

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থী ইয়াছিন চৌধুরী আছুকে জেতাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ভাগিয়ে নিয়েছেন তার ছোট ভাই নুরুল আলম— এমন অভিযোগ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।

শুধু তাই নয়, গত চসিক নির্বাচনেও একইভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছিলেন বিএনপির ইয়াছিন চৌধুরী আছু।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, আছুর ভাই নুরুল আলম গত নির্বাচনে ছায়া প্রার্থী হয়ে তার এজেন্টসহ লোকজনকে আছুর জন্য কাজে লাগিয়েছেন।

চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া নুরুল আলম বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে এবং ইয়াছিন চৌধুরী আছু বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সম্পাদক।

এর আগে ওই ওয়ার্ডে পরপর তিনবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন আছু।

অভিযোগ অস্বীকার করে দুই ভাই চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন- তাদের মাঝে পারিবারিক ও রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। যা মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে।

বিএনপি প্রার্থী ইয়াছিন চৌধুরী আছু বলেন, ‘আমি জনগণের ভোটে টানা ১৫ বছর কাউন্সিলর। কোনো ষড়যন্ত্রই আমার বিজয় ঠেকাতে পারেনি। পরিবারের ৮ ভাইয়ের মধ্যে শুধু আমি বিএনপির রাজনীতি করি। আমার অন্য ভাইয়েরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা বিএনপির রাজনীতি করায় আমি তাদের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মামলারও আসামি। তাদের সবার সাথে শুধু রাজনৈতিক মতাদর্শগত কারণেই আমার দূরত্ব।’

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নুরুল আলম বলেন, ‘এবারই দলীয় সিদ্ধান্তে কাউন্সিলর প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আগে আওয়ামী পরিবারের ৪ থেকে ৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতেন। তাই ভোটাররা সিদ্ধান্তহীনতায় থাকতেন, কাকে ভোট দিবেন। এবার দল সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। আওয়ামী পরিবার আমাকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ। এলাকার সাধারণ মানুষও উন্নয়নের জন্য আমাকেই ভোট দিবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার সময় দলে আমার কী অবস্থান তা যাচাই-বাচাই করেই মনোনয়ন দিয়েছে। অন্য দলে উড়ে এসে জুড়ে বসা যায়, আওয়ামী লীগে সেই সুযোগ নেই। দিনে দিনে পরিশ্রম করেই আমি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হয়েছি। নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হয়েছি।’

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত চসিক নির্বাচনে বিএনপির ইয়াছিন চৌধুরী আছু ৫ হাজার ৭৫৭ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান পেয়েছিলেন ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট। এবার যিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সেই নুরুল আলম পেয়েছিলেন ৮৪২ ভোট। দল নুরুল আলমকে মনোনয়ন দিলেও মাঠ ছাড়ছেন না আব্দুল মান্নান। তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।

আব্দুল মান্নান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারি নগরীর কোতোয়ালী মোড়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করার পাশাপাশি অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। আমিও তখন কারাবন্দি হই। ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে আমি গ্রেপ্তার হই। ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্বপালন করা থেকে এ পর্যন্ত দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছি। বাকলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। আশাকরি দল সব বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত আমাকেই সমর্থন দিবে।’


এফএম/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!