বাকলিয়ার এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে ইয়াবাবাণিজ্য ও হয়রানির অভিযোগ

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) বাকলিয়া থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাকলিয়া থানাধীন শাহ্ আমানত সেতু পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই জামাল দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীকে হয়রানি করে আসছেন—এমন অভিযোগে গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশ কমিশনারকে দিয়েছেন ৩৫ নম্বর বক্সিরহাট ওয়ার্ডের অধিবাসীরা।

তবে এসআই জামাল উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, বাকলিয়ায় যেসব জায়গায় জুয়ার আসর বসতো সেসব ঘরের চাবি থানায় জমা। কোথাও জুয়ার আসর বসে না। মূলত মাদক, জুয়াসহ যাবতীয় অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে যাদের স্বার্থহানি হচ্ছে তারাই নামে-বেনামে এই অভিযোগ করেছে।

অভিযোগে বলা হয়, শাহ্ আমানত সেতু পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই জামাল দীর্ঘদিন ধরে শাহ আমানত সেতু এলাকার চাক্তাই ও রাজাখালী এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও তার অবাধ্য হলে ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মামলায় চালান দেয়ার কথাও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ওই এসআইয়ের অবাধ্য হয়ে ইতিমধ্যে জেলে আছেন এলাকাবাসী সাইফু, জসিম, মিজান, রাজু, দুদু, সোহেল, আহম্মদ, জাফর, জহিরসহ আরও অনেকে। তাদের অপরাধ তারা জামালের হয়ে ইয়াবা বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, শাহ্ আমানত সেতু পুলিশ বক্সের সাবেক ইনচার্জ খন্দকার সাইফুদ্দিন সাইফু ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হলে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তাকে পালাতে সহযোগিতা করার দায়ে এসআই জামাল বরখাস্ত হয়ে কিছুদিন ব্যারাকে ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি পুনরায় শাহ আমানত সেতু পুলিশ বক্সের ইনচার্জ হয়ে এসে বেপরোয়া আচরণ করছেন। তার নেতৃত্বে চলছে মাদক ও জুয়ার ব্যবসা।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, চাক্তাই ভেড়া মার্কেট বস্তিতে চারটি, বাস্তুহারা বস্তিতে তিনটিসহ প্রায় ডজনখানেক জুয়ার আসর চলছে এসআই জামালের নেতৃত্বে। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাকলিয়া থানার কতিপয় পুলিশ সদস্য।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, তার এসব অপকর্মের সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে কিছুদিন বন্ধ থেকে আবার চালু হয় এসব আসর। তার রয়েছে সোর্স নামের বিশাল ইয়াবা সিন্ডিকেট। যাদের অনেকেই তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। এদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালিত অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

অভিযোগে জানানো হয়, জামালের হয়ে ইয়াবা বিক্রির সাথে জড়িত রফিক, রিফাত, আক্কাস, আব্বাস, রাসেল, মুন্না, বেলাল, রুপালী, আঞ্জুমান আরা, জুনুনী, সোর্স শারমিন, সোর্স রুমাসহ আরও অনেকে।

এছাড়া অভিযোগে স্কুল-কলেজগামী সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ইয়াবা ও জুয়ার আসর স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জোর দাবি জানানো হয়।

এ ব্যাপারে এসআই জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেছিল। তদন্তে আমার সম্পৃক্ততা না পেয়ে আমাকে স্বপদে বহাল রেখেছে। আর নেজাম স্যার বাকলিয়া থানায় ওসি হিসেবে জয়েন করার পর ১০৮টি মামলা হয়েছে। বাকলিয়ায় যেসব জায়গায় জুয়ার আসর বসতো সেসব ঘরের চাবি থানায় জমা। কোথাও জুয়ার আসর বসে না। মূলত মাদক, জুয়াসহ যাবতীয় অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে আমাদের চলমান অভিযানে যাদের স্বার্থহানি হচ্ছে তারাই নামে-বেনামে এই অভিযোগ করেছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চলমান অভিযানে যারা নাখোশ তাদের পক্ষ থেকে বেনামে স্বাক্ষর করে ওই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এসআই জামালের বিরুদ্ধে আনীত আগের অভিযোগ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে সত্যতা পাননি। তাই তাকে স্বপদে বহাল করা হয়েছে।’

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!