সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়

সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় 1এহসান আল-কুতুবী : পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ উৎসবে অংশ নেন। নববর্ষ উদযাপনে এমন বন্ধন পৃথিবীতে বিরল। বৈশাখের সঙ্গে বাঙালি জীবনের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চায় পহেলা বৈশাখ বাঙাতি জাতির জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। নানা আয়োজনে নেচে গেয়ে হেসে খেলে এ দিনটি পার করে দেশ প্রেম ও দেশীয় সংস্কৃতিকে বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিতে। এদিন হিংসা বিদ্ধেষ ভুলে সুন্দর সমাজ ও দেশ গড়ার শপথে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয় । সেই সাথে দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধ পরিকর হয়ে উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ মুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে নতুনভাবে হাতে হাত মিলিয়ে উদ্দীপ্ত শপথ গ্রহন করে সবাই ।
‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ স্লোগানকে ধারণ করে নগরীর সিআরবির শিরীষতলায় চলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ভায়োলিনিস্ট চিটাগাং এর বেহালার সুরে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে সাড়ে সাতটায় অনুষ্ঠান শুরু হয় ।

অনুষ্ঠানে দলীয় পরিবেশনায় অংশ নিয়েছে সংগীত ভবন, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ, বোধন আবৃত্তি স্কুল, অবকাশ ধারা শিল্পী সংস্থা, সুন্দরম শিল্পীগোষ্ঠী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, চারুতা নৃত্যকলা একাডেমি, উচ্চারক আবৃত্তি কুঞ্জ, শ্যামা নৃত্যাঙ্গন, নৃত্যনন্দন, চট্টল কুঁড়ি, নির্মাণ আবৃত্তি অঙ্গন, শাশ্বত ললিতকলা একাডেমি, গোধুলী সংগীত একাডেমি, নিক্কন একাডেমি, নৃত্য নিকেতন, সাধনা সঙ্গীত একাডেমি, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, শব্দনোঙর, ছন্দানন্দ সাংস্কৃতিক পরিষদ, সুর সাধনা সঙ্গীতালয়, স্লোগান সাংস্কৃতিক স্কোয়াড, সপ্তস্বর সঙ্গীত বিদ্যালয়, সৃজামি’।

এ ছাড়াও আয়োজনে ছিল বাউল সংগীতের। এতে বাউল গান পরিবেশন করে রাজ্জাক সাঁই বাউল ও তাঁর দল। পরবর্তীতে মোহাম্মদ হোসেন, শংকর দে, পাপড়ি ভট্টাচার্য্য, পলি শারমিন, শিমুল শীল, সনজিত আচার্য্য, শর্মিষ্ঠা চৌধুরী একক সংগীত পরিবেশন করেন ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় :
ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। শুক্রবার (১৪ এপ্িরল) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলায় গিয়ে শেষ হয়।
এতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আকতার চৌধুরী, রেজিস্ট্রার( ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কামরুল হুদা, বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের ডিন এবং প্রক্টর মো. আলী আজগর চৌধুরীসহ শিক্ষক-শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
চারুকলা ইনস্টিটিউট :
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় নগরীর বাদশা মিঞা সড়কে অবস্থিত ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি কাজির দেউড়ি-জামালখান-চেরাগী পাহাড় মোড় হয়ে ডিসি হিলে গিয়ে শেষ হয়।

এতে ইনস্টিটিউটের বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। ফলে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়ে ওঠে নতুন পুরাতনের মিলনমেলাও
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়:
বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে সাতটায় চুয়েট গোলচত্বরে বৈশাখী শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিপুলসংখ্যক শিশুকিশোর নেন। শোভাযাত্রাটি চুয়েট আবাসিক গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এ সময় চুয়েট উপাচার্য উপস্থিত সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। চুয়েট স্টাফ ওয়েলফেয়ার সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল আলম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে চুয়েট বৈশাখী মঞ্চে বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘প্রাণের বন্ধনে বৈশাখ’ শীর্ষক দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল পান্তা-ইলিশ, বাউল উৎসব, ঘুড়ি উৎসব, শিশু-কিশোরদের অনুষ্ঠান, লটারি ড্র, বৈশাখের আলোচনা, সাংস্কৃতিক ও লোকসঙ্গীতের অনুষ্ঠান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!