বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইতিহাস গড়লেন ১৩ বছরের রাব্বি

বঙ্গোপসাগরে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন দুই নারীসহ ৪৩ জন সাঁতারু। এতে বিদেশি সাতারুসহ এবার সর্বোচ্চ ৪৩ সাঁতারু অংশ নিয়েছেন। তারা সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহ্‌পরীর দ্বীপ জেটি থেকে শুরু করেছে সাঁতার।

এতে সবচেয়ে কম সময়ে এটি পাড়ি দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন ১৩ বছর বয়সী রাব্বি রহমান। তিন ঘণ্টা ২০ মিনিটে সাঁতরে ১৬ দশমিক এক কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিনে পৌঁছান তিনি। বঙ্গোপসাগরের বাংলা চ্যানেলের ১৬ কিলোমিটার পথ সাঁতরে সাঁতারুদের পৌঁছাতে হয় সেন্টমার্টিন দ্বীপে। ১৫তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারের আয়োজক ‘অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা।’ সাঁতারের সহ-আয়োজক বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও পর্যটন বোর্ড। রেসকিউ পার্টনার বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক এক কিলোমিটার দূরত্বের বঙ্গোপসাগরের এ চ্যানেলটির নাম ‘বাংলা চ্যানেল’। এই বাংলা চ্যানেলটি পাড়ি দিতে প্রতিবছর সাতারুদের নিয়ে আয়োজন করে থাকেন ‘অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে ধীরে ধীরে জড়ো হতে থাকে ৪৩ জন সাতারু। সকালের চিক চিক রোদ এবং জলমল নোনা পানিতে সাঁতরায় ওরা। লক্ষ্য শুধু একটাই। বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে পৌঁছবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। সঙ্গে দু’নারীও। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দ্বীপে প্রথম পৌঁছেন ১৩ বছর বয়সী রাব্বি রহমান। এটা পাড়ি দিয়ে তিনি ইতিহাসের পাতায় নাম লিখেছেন। সবচেয়ে কম সময়ে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার গৌরবও অর্জন করেন তিনি।
রাব্বি ছাড়া সাইফুল ইসলাম রাসেল তিন ঘন্টা ২১ মিনিটে পাড়ি দিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। তিন ঘন্টা ৩০ মিনিটে পাড়ি দিয়ে তৃতীয় হয়েছেন সোজা মোল্লা। ধাপে ধাপে বিকেল পাঁচটার পর বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দ্বীপে পৌঁছান সব সাতারু। তবে শেষে দ্বীপে পৌঁছেন ৬৮ বছর বয়সী সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য সাঁতারু।

আয়োজকরা জানান, বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার এই সাঁতার আয়োজনটি গত মার্চ মাসে হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। এবার চ্যানেল সাঁতারের আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে এই আয়োজন করা হচ্ছে। সাঁতারুরা ফ্রি হ্যান্ড সুইমিং করেন। নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেক সাঁতারুর সঙ্গে একটি করে উদ্ধারকারী নৌকা ছিল। এছাড়া বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সার্ভিস বোট, জরুরি নৌকা ও ডুবুরিরা ছিল।

অ্যাডভেঞ্চার গুরু খ্যাত প্রয়াত কাজী হামিদুল হক সমুদ্র সাঁতারের উপযোগী বঙ্গোপসাগরের এই বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন। ২০০৬ সালে প্রথমবার আয়োজনে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির ও সালমান সাঈদ। এবারের ১৫তম আসরে ৪৩ সাঁতারুর মধ্যে ১ জন বিদেশি, ২ জন নারী ও ২ জন পুলিশ কর্মকর্তাও ছিলেন। গত বছর ৩১ সাঁতারু বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!