বাঁশখালীর সংঘর্ষে নিহত ২, থানায় ছাত্রলীগ নেতার বিষপান বাবাকে আটকের প্রতিবাদে (ভিডিও)

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বসতবাড়ির সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষে ২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক রাসেল ইকবালের বাবা। এটিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি দাবি করে বাবাকে আটকের প্রতিবাদে থানায় এসে বিষপান করেছেন দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক রাসেল ইকবাল। গুরুতর অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বাঁশখালী পৌরসভার জলদি এলাকায় মুনছুরিয়া বাজারের পাশে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়ানোরা সম্পর্কে আত্মীয় হন। বাড়ির সীমানা প্রাচীরে পানি নিষ্কাশনের একটি পাইপ নিয়ে এই সংঘর্ষ হয় বলে পুলিশ জানায়।

এ ঘটনায় আরও চারজন আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

নিহতরা হলেন জলদি এলাকায় মুনছুরিয়া বাজারের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল খালেক (৩৪) এবং কামালের ছেলে সোলতান মাহমুদ টিপু। টিপু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন খালেকের ভাই মো. কামাল উদ্দিন, চাচাতো ভাই মঞ্জুর আলম এবং মো. বাহাদুর।

বুধবার (২০ অক্টোবর) বেলা ২টায় প্রকাশ্যে এ ঘটনাটি ঘটেছে বাঁশখালী প্রধান সড়কের মনছুরিয়া বাজার এলাকায়। হতাহত প্রত্যেকের বাড়ি বাঁশখালী পৌরসভার দক্ষিণ জলদী গ্রামের রঙ্গিয়াঘোনা এলাকায়।

বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক জানান, সংঘর্ষে জড়ানোরা সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাই। দুপুরে তাদের বাড়ির সীমানায় পানি নিষ্কাশনের একটি পাইপ নিয়ে মারামারি হয়। ছুরিকাহত হয়ে আব্দুল খালেকের মৃত্যু হয়। এসময় দুই পক্ষের আরও ৫ থেকে ৬ জন আহত হন।

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছি। তবে তাদের নাম বলা যাচ্ছে না আপাতত।’

আটক দুজনের মধ্যে একজনকে নির্দোষ দাবি করে তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল ইকবাল থানার মূল ফটকে এসে বিষপান করার খবর পাওয়া গেছে। রাসেল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক।

বিষপানের আগে এক ফেসবুক লাইভে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল রাজনৈতিক কারণে আগেও বিভিন্নভাবে তাকে ও তার পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ আনেন বাঁশখালী থানার বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে থানা ফটকের সামনে বিষপান করেন তিনি।

রাসেলের ঘনিষ্ঠদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাঁশখালী থানা পুলিশের সোর্স কালা শুক্কুর ও মাহমুদুল ইসলাম নামে দুজন থানা পুলিশের সহায়তায় এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানির মুখে ফেলে চাঁদাবাজি করে। তাদের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে রাসেল ইকবালকে বিভিন্নভাবে ফাঁসাতে কাজ করে আসছিল দালালচক্রটি। এই ক্ষোভ থেকেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন রাসেল।

এদিকে জানা গেছে, জায়গা-জমির বিরোধের জের ধরে গত একমাস ধরে কয়েক দফা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বুধবার দুপুর ১২টায় চাচা কাছিম আলীর ছেলেদের সাথে তাদের পাড়া রঙ্গিয়াঘোনা এলাকায় হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এর দুই ঘন্টা পর বাড়ির পাশে মনছুরিয়া বাজার এলাকায় আব্দুল খালেক ও তার চাচা সোলতান মাহমুদ টিপু গেলে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাদের প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও হাতুড়ি পেটা করতে তাকে। ওই সময় বাজারে অনেক লোক ছিল।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!