বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে মামলার বাদি খুন

চাপা উত্তেজনা এলাকায়

বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের দক্ষিণ সরল গ্রামে রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত তিনটার দিকে দুর্বৃত্তের গুলিতে আবুল কালাম (৩৭) নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। গত বছরের ২ নভেম্বর সংঘটিত এক সন্ত্রাসী ঘটনায় আবুল কালামের সৎ মা হালিমা বিবি, বোন হোসনে আরা ও ভাবী শাহেনা আক্তারসহ আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন আবুল কালাম। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ওই মামলার আসামিরা এ হত্যার ঘটনা ঘটায় বলে নিহতের নিকটাত্মীয়রা জানান। এ নিয়ে এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

Banskhali-abul-kalam-Saral
পাশাপাশি ছবিতে মৃত ও জীবিত আবুল কালাম
নিহত আবুল কালাম দক্ষিণ সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মাস্টার কবির আহমদের পুত্র। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার, মা জাহানারা বেগম, সৎ মা হালিমা বিবি ও বোনদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। অবুঝ দুটি শিশুপুত্র এদিক-ওদিক ঘুরে শুধু পিতার খোঁজ করছে। আবুল কালামের লাশ থানায় রাখা হয়েছে। বাঁশখালী হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম তারেক জানান, নিহত আবুল কালামের শরীরে ২০টির মত ছররা গুলি রয়েছে।

নিহতের বড় ভাই আবুল হাশেম বলেন, ‘বাড়ির অদূরে আমার একটি ওষুধের দোকান আছে। আমি গ্রাম্য চিকিৎসা করি। আমার প্রতিবেশী হাজী শাহ আলমের পুত্র ইসকান্দারের ডায়রিয়া হওয়ায় আমি তার শরীরে স্যালাইন পুশ করি। তারপরও ডায়রিয়া বন্ধ না হওয়ায় রাত ৩টা নাগাদ আমার ভাই আবুল কালামকে আমার ওষুধের দোকানে ওষুধ আনার জন্য পাঠাই। আবুল কালাম দোকান খোলার সাথে সাথে ১৫-২০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার ভাইকে গুলি করতে থাকে। গুলির আওয়াজ শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা আরও ৪-৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। আমার ভাইয়ের রক্তাক্ত নিথর দেহ ওষুধের দোকানের ভিতর পড়ে থাকে। প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে লাশ উদ্ধার করে।

আবুল হাশেম অভিযোগ করেন, ‘গত বছরের ২ নভেম্বর সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনায় আমার ভাই মামলা করায় ওই মামলার আসামিরা আমার ভাইকে খুন করেছে। এর আগেও নানাভাবে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল এবং হুমকিও দিয়ে আসছিল।’

সোমবার সকাল ৮টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ওষুধের দোকানের ভিতর ছোপ ছোপ রক্ত। আশেপাশের মানুষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা। নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার, মা জাহানারা বেগম, সৎ মা হালিমা বিবি ও বোনদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। অবুঝ দুটি শিশু পুত্র এদিক-ওদিক ঘুরে শুধু পিতার খোঁজ করছে।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পূর্ব শত্রুতার রেশ ধরে আবুল কালাম খুন হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!