বাঁশখালীতে ছুড়ে মারা আগুনে পুড়ে মৃত্যু শয্যায় মাদ্রাসা ছাত্রী

থানায় মামলা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পারিবারিক বিরোধের জেরে জ্যাঠা-জ্যাঠির ছুঁড়ে মারা আগুনে পুড়ে ও গরম পানিতে ঝলসে গেছে খাইরুন্নিছা বেগম (৯) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীর শরীরের ৩০% পুড়ে গিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সে। পাশাপাশি ওই বিরোধে লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে গুরুতর আহত হয়েছেন ছাত্রীর মা জোহরা খাতুন (৪০)। এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের কাহারঘোনা গ্রামে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা বশির আহমদ শনিবার (২৭ জুলাই) রাতে বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

থানার এজাহার ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ‘একইঘরে বসবাস করতো (দুই ভাই) ছিদ্দিক আহমদ ও বশির আহমদ। ছিদ্দিক আহমদের দুই পুত্র বিদেশে থাকায় তারা প্রভাবশালী। বশির আহমদ দিনমজুরি করে সংসার চালায়। গত ২১ জুলাই রাত ৮টায় ছিদ্দিক আহমদের পুত্র নাজিম উদ্দিনের শিশুপুত্র রাস্তায় মলত্যাগ করে। বশির আহমদের কন্যা খাইরুন্নিছা রাতে হেঁটে যাওয়ার সময় ওই মল তার পা’য়ে লাগে। খাইরুনিছা বিষয়টি তার জ্যাঠা ছিদ্দিক আহমদ ও জ্যাঠি বদিউজ্জামান বেগমকে জানায়। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা খাইরুনিছাকে চুলার আগুন ও গরম পানি ছুঁড়ে মারে। ওই বিরোধে ছিদ্দিক আহমদের পুত্র নেজাম উদ্দিন ও পুত্রবধূ হামিদা বেগমও লাটিসোঠা নিয়ে জড়িয়ে পড়ে। ওই সময় হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে ঝলসে যায় খাইরুন্নিছার। লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয় খাইরুন্নিছার মা জোহরা খাতুন। প্রতিবেশিরা আগুনে ঝলসে যাওয়া খাইরুন্নিছা ও মাথা ফেটে রক্তাক্ত হওয়া দুইজনকে ওই রাতে বাঁশখালী হাসপাতালে ভর্তি করায়। চিকিৎসক খাইরুন্নিছাকে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করেন। গত ৮ দিন ধরে চমেকের বার্ন ইউনিটে ঝলসে যাওয়া শরীর নিয়ে খাইরুন্নিছা মৃত্যু শয্যায় কাতরাচ্ছে। সে কাহারঘোনা এলাকার রওশনিয়া লিমুল কোরআন মাদ্রাসার হেফজ ও এতিমখানার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নুর হোছাইন খাইরুন্নিছা দগ্ধ হবার ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি কামনা করেছেন।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তপূর্বক মামলা দায়ের হয়েছে। দোষীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। দোষীরা কেউ পার পাবে না।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!