বসন্ত বাতাসে ভালোবাসার ঘ্রান

উৎসবে উদ্বেল নাগরিক প্রাণ

এবারই প্রথম বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে একইদিনে। তাই উৎসবে রঙের ছোঁয়াটাও ছিল অনেক বেশি। শীতের দিনে মিষ্টি রোদ্দুরে চট্টগ্রাম নগরের অবকাশ কেন্দ্রগুলো ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।

এদিনে একসঙ্গে ফ্রেমবন্দি হওয়া যেন অবধারিত। নানা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে ছবি তুলে, খোশগল্পে মশগুল সমবয়সী, বন্ধু সহপাঠীরা। তারা জানান, ভালোবাসা মানেই প্রেমিক-প্রেমিকা নয়। ভালোবাসা বাবা-মা, ভাই-বন্ধু সবার সাথেই হতে পারে। ভালোবাসা ছাড়া সবকিছুর উর্দ্ধে।

অন্যদিকে শীতের বিদায় বার্তা নিয়ে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। এ যেন শীতের রুক্ষ ভাব কাটিয়ে প্রকৃতিতে নতুনের আবাহন। গাছে গাছে নতুন শাখা, নতুন পাতা, নতুন ফুল হাতছানি দিচ্ছে নতুন প্রাণের উচ্ছ্বাসে। বিভক্তির বেড়াজাল কাটিয়ে বসন্ত বাঙালির জীবনে আসে সম্মিলনের আবাহন নিয়ে। ফাগুনের প্রথম দিনটি চট্টগ্রামের নগরজীবনে প্রতিবারের মতো এবারও এসেছে উৎসবের রঙ নিয়ে। সেই রঙ ছুঁয়ে গেছে নানা বয়সী মানুষের মধ্যে।

দিনটি বিশেষভাবে উদযাপনের জন্য চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আয়োজন করে বসন্ত অনুষ্ঠানের। বাংলার চিরায়ত গান, নাচ, আবৃত্তি, কথামালাসহ নানা আয়োজনে শুরু থেকেই ভরপুর ছিল উৎসব অঙ্গণ।

বসন্ত বাতাসে ভালোবাসার ঘ্রান 1

সকাল ৮টায় নগরীর সিআরবির শিরীষতলায় মুক্তমঞ্চে বেহালা ও ঢোলবাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের বসন্ত উৎসব। বন্দরনগরীতে বসন্ত উৎসবের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষক ড. মাহবুবুল হক।

চট্টগ্রাম নগরীর আমবাগানে রেলওয়ে জাদুঘরের সামনে শেখ রাসেল পার্কের মুক্তমঞ্চে বসন্ত বরণের আয়োজন করে বোধন আবৃত্তি পরিষদের একাংশ। শুক্রবার সকালে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সোহেল আনোয়ারের একক আবৃত্তি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর ভায়েলিনিস্ট চিটাগং বেহালা এবং দীপক ও তার দলের ঢোলবাদনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে অনুষ্ঠানমালা। বোধনের শিশু বিভাগের শিল্পীরা বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে। বিকেলে তবলার লহড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া আয়োজন চলে রাত পর্যন্ত।

অন্যদিকে নগরীর জামালখান মোড়ে সম্মিলিত বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনের উদ্বোধন করেন সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া এই আয়োজনে মোহনবীণার সুর উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। এছাড়াও নগরীর পুরাতন নগর ভবনে বোধনের একাংশ এবং শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে আয়োজিত হয় যন্ত্রসঙ্গীত, একক আবৃত্তি, একক ও দলীয় সঙ্গীতসহ আরও নানা আয়োজন।

নগরজুড়ে আয়োজিত এসব বিশেষ আয়োজন সারাদিনই মুখর করে তোলেন নানা বয়স ও শ্রেণি পেশার মানুষ। এ যেন বসন্তের বাতাসে ছড়িয়ে পড়া ফুলের সুবাস। যেন নতুন প্রাণের স্পন্দন। ইট-পাথরের নাগরিক জীবনে ছড়িয়ে যাক বসন্তের রঙ।

এএ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!