বর্তমান সময়ে সরকার কঠিন মূহুর্ত পার করছে : ওবায়দুল কাদের

বর্তমান সময়ে সরকার কঠিন মূহুর্ত পার করছে : ওবায়দুল কাদের 1মোঃ ইউনুছ, নাইক্ষ্যংছড়ি : সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বর্তমান সময়ে সরকার কঠিন মূহুর্ত পার করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব। সরকার দীর্ঘ ২৭/২৮ দিন যাবৎ প্রায় আট লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে প্রশংসিত হচ্ছে সারা বিশ্বে। বাংলাদেশ খুব একটা ধনী দেশ নয়, তবে ধনী দেশ হওয়ার পথে। প্রধানমন্ত্রীর চলমান উন্নয়ন বর্তমানে গ্রামে-গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে।
(২৪শে সেপ্টেম্বর) রবিবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা মিলনায়তনে মতবিনিময় ও ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দেশের উত্তরবঙ্গে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি সরকার, তার উপর আবার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মায়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে বাঁচতে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসছেন রোহিঙ্গারা। তাই বর্তমানে একটা মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি দল সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে দেশের জনগনের দোয়ায় শেখ হাসিনা সরকার প্রশংসিত হচ্ছে বারবার। তিনি বলেন- বিএনপি শুধু ঢাকায় বসে প্রেস ব্রিফিং রাজনীতি করছে। রাজনীতি নয়, দল মতের উর্দ্ধে থেকে কাজ করুন। সিভিল প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন জন্মদিনে আনন্দ না করে এর অর্থ রোহিঙ্গাদের ত্রান হিসেবে প্রদান করার জন্য। তবে আনন্দ না করে মসজিদ, মন্দির, ক্যাং ও প্রেগোড়ায় প্রার্থনা করা হবে প্রধানমন্ত্রীর জন্য।
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন রোহিঙ্গা বিষয়টি দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থেকে সমাধান করার জন্য। এছাড়া রোহিঙ্গা বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল প্রশাসন ত্রান কাজে সর্বাত্ত্বক সহযোগীতা করে যাচ্ছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুটি এবার জাতিসংঘের মত ফোরামেও এবিষয়টিকে নিয়ে ততটা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিশ্বনেতারা রোহিঙ্গা নিধন ও তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে যতেষ্ট ভূমিকা রাখছেন।
এছাড়া তিনি নাইক্ষ্যংছড়ির অভ্যন্তরিন ও সীমান্ত সড়ক গুলো শীগ্রই সংস্কার করার জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ, এল.জি.ই.ডিকে নির্দেশ প্রদান করেন।
৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল আনোয়ারুল আযীম বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ১৫ হাজার রোহিঙ্গা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এদের জীবন যাত্রার মান স্বাভাবিক করতে যদি সেনাবাহিনী না আসে তাহলে এসব বাস্তুহারা রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়ায় পাঠানো হবে। তিনি আরো বলেন, আশ্রিত রোহিঙ্গারা বর্তমানে শৌচাগার না থাকায় দূর্ভোগে পড়ছেন বেশি। যার কারণে স্বাস্থ্যহানীর ঘটনা ঘটতে পারে। যদিও বিজিবির পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তিনি সীমান্তের অভ্যন্তরিন সড়ক গুলো সংস্কারের উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন।
জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কারণে অভ্যন্তরিন আইন-শৃঙ্খলা সুষ্ট রাখার জন্য ইতিমধ্যে ঘুমধুমে ২ শত অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স বাড়ানো হয়েছে। ৪০টি মন্দিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ৫টি মোবাইল টিম এবং রোহিঙ্গা গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়া রোধে ৬টি চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে সুরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সীমান্ত সড়ক গুলো দিয়ে ১ টনের বেশী ত্রান নিয়ে গাড়ী চলাচল নিষেধ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা ও ত্রান বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যাদের মধ্যে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক সামীম, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব সাইফুজ্জামান শেখর, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেব নাথ এমপি, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, ৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লে.কর্ণেল আনোয়ারুল আযীম, বান্দরবান পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক বেবী ইসলাম, যুগ্ন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষীপদ দাশ, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম সরওয়ার কামাল, উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ক্যাউচিং চাক, যুগ্ন আহবায়ক আবু তাহের কোম্পানী, তসলিম ইকবাল চৌধুরী সহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের মাঝে রেডক্রিসেন্টের ত্রান দিতে গিয়ে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৯ পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করেন এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আরো ১ লক্ষ টাকা সহযোগীতার ঘোষনা দেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!