বরকল খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস যেন গোয়ালঘর!

দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন এটি একটি গোয়ালঘর। কাছে গিয়ে জরাজীর্ণ ভবনের দেয়ালে ঝাপসা লেখায় ঝুলানো সাইনবোর্ড দেখে বুঝা যাবে এটি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। বলছিলাম রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস কক্ষের কথা।

জানা যায়, ১৯৬৪ সালের দিকে একতলা পাকা ভবনটি নির্মিত হয়। নির্মাণের ৫৫ বছর পরেও এ অফিস ভবনটি মেরামত কিংবা সংস্কার করা হয়নি। বর্তমানে ভবনটির দেয়ালগুলো ছত্রাকে আক্রান্ত করে কালো রঙের হয়ে গেছে। দেয়ালের রং ও পলেস্তরা খসে পড়ছে। ভবনের ছাঁদ নানা ধরনের ঘাস গুল্ম ও ঝোঁপ-জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ভবনের চারপাশে অসংখ্য ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। অফিস ভবনে দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড যেমনি করার পরিবেশ নেই তেমনি থাকারও কোনো ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যার কারণে উপজেলা খাদ্য বিভাগের দুইজন নৈশ প্রহরী পদের কর্মচারী কর্মস্থলে উপস্থিত থাকলেও বাকী কর্মকর্তা কর্মচারীরা মাসে দু’একবার কর্মস্থলে আসেন। বাকী দিনগুলো জেলা সদরে বসে দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডের কাজগুলো ছাড়েন তারা। এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরটির সমস্যা দেখারও কেউ নেই।

খাদ্য বিভাগের জরাজীর্ণ অফিস ঘরের নানা সমস্যার কথা স্বীকার করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মন্টু মনি চাকমা বলেন, ‘১৯৬৪ সালে খাদ্য বিভাগের অফিস ভবনটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ ৫৫ বছরেও এ অফিস ভবনটি মেরামত সংস্কার কিংবা পূনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট খাদ্য বিভাগ। ফলে জরাজীর্ণ অফিস ভবনটি যেন গোয়াল ঘরে পরিণত হয়েছে। এতে অফিসে বসে যেমনি কাজ করা যাচ্ছে না তেমনি থাকারও ব্যবস্থা নেই। জেলা সদর থেকে উপজেলা সদরে এসে কাজ সেরে আবার বাড়িতে ফিরতে হয়। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আর্থিক-মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন বলেন, ‘বরকল খাদ্য বিভাগের অফিস কক্ষটিসহ জেলার আরও কয়েকটি খাদ্য অফিসের করুণ অবস্থার কথা লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিমাসে জেলার সমন্বয় মিটিংয়ে বার বার উত্থাপন করা হয়। কিন্তু বরাদ্দ না আসায় নতুন করে ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। খাদ্য বিভাগের ভবন এলজিইডি-গণপূর্ত বিভাগসহ অন্য কোনো সরকারি দপ্তর থেকে নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট খাদ্য বিভাগের পরিদর্শন উন্নয়ন ও পরীক্ষণ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট খাদ্য বিভাগের উন্নয়ন কাজ করা হয়। বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় অন্য বিভাগে কাজ চলছে। চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য বরাদ্দ আসলে রাঙামাটির উপজেলার জরাজীর্ণ ভবনগুলোর কাজ করা হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!