বন্দরে ১৫০০ টন পেঁয়াজ নামার অপেক্ষায়

প্রতিদিনই আসছে পেঁয়াজের ছোটবড় চালান। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। কয়েকদিন কিছুটা কমলেও আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে পেঁয়াজের দাম।

দুই দিনে চট্টগ্রামভিত্তিক বিএসএম গ্রুপ ৭০০ টন, ঢাকার মেঘনা গ্রুপ এনেছে ৮০০ টন পেঁয়াজ। এই দুই প্রতিষ্ঠানের বাইরে ছোট আমদানিকারকদের পেঁয়াজ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়েছে একাধিক জাহাজ।

জানা গেছে, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে দেশের শীর্ষ শিল্পগ্রুপগুলো বিদেশ থেকে সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেয়। এরমধ্যে সবচে বেশি ৫৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নেয় এস আলম গ্রুপ। তাদের পেঁয়াজ কিছু উড়োজাহাজে এবং কিছু সমুদ্রপথে আসবে। প্রতিদিন কার্গো উড়োজাহাজে ১০০ টন করে পেঁয়াজ ঢাকা বিমানবন্দরে নামছে।

এছাড়াও সিটি গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপও আড়াই হাজার টন করে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু সেসব পেঁয়াজ আসতে দেরি হওয়ায় সরকার আকাশপথে উড়োজাহাজে জরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করে। বিমানে এস আলম গ্রুপ প্রতিদিন একশ টন করে পেঁয়াজ আনছে; তা ঢাকা শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে নামছে।

কিন্তু সব শীর্ষ শিল্পগ্রুপগুলোকে পেছনে ফেলে চট্টগ্রামভিত্তিক বিএসএম গ্রুপ প্রথম সমুদ্রপথে জাহাজে পেঁয়াজ নিয়ে আসে। গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) সেটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে যায়। বিএসএম গ্রুপ তিন জাহাজে মোট ৭০২ টন পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়েছে দুটি জাহাজ। একটি হচ্ছে ‘ওইএল স্ট্রেইট’, আরেকটি ‘মাউন্ট কেলেট’। দুটি জাহাজেই ৭৭৪ টন পেঁয়াজ রয়েছে। এছাড়া বুধবার জাহাজ থেকে নামানো হয়েছে ৯০০ টন। মিসর, চীন, তুরস্ক থেকে এসেছে এসব পেঁয়াজ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সংঘনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৭১ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির এলসির বিপরীতে ৯ হাজার ৩৩৩ টন পেঁয়াজ এসেছে। বড় শিল্পগ্রুপগুলোর পেঁয়াজ আসার পর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনে আরো কমে যাবে পেঁয়াজের দাম। তিনি জানান, গত ২৬ নভেম্বর থেকে প্রতিদিনই পেঁয়াজ খালাস হয়েছে বন্দরে।

খাতুনগঞ্জ কাঁচাপণ্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং চীনের পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে ট্রাকে করে ৪০০ টন পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে ঢুকেছে। তবে মিসর ও তুরস্কের কোন পেঁয়াজ ঢুকেনি।

চট্টগ্রামে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করায় কিছুটা কমেছিল দাম। কিন্তু টিসিবির খোলা বাজারে বিক্রি বন্ধের পর আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। গত ৪ দিনের ব্যবধানে নানা অজুহাতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজ।খুচরা বাজারে গত সপ্তাহে ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ আবারও ছুয়েঁছে দুই শতকের ঘর।

এ ব্যাপারে টিসিবি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক প্রধান জামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকা থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ না করায় আমরা চট্টগ্রামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছি না। চট্টগ্রামের দুই দিন টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছিল। দুই দিনে ১৩ টন সরবরাহ করা হয়েছে।

এএস/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!