বন্দরে পড়ে থাকা বিপজ্জনক রাসায়নিক নেওয়া হবে পুরোনো গোলায়

চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে থাকা বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্যের কন্টেইনার সরানো হবে এ মাসের মধ্যেই। ইয়ার্ডে পড়ে আছে ৩০ বছরের পুরোনো বিপজ্জনক রাসায়নিকও। এভাবে নিলামযোগ্য রাসায়নিক পণ্যের অনেক স্তূপ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে বিপাকে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। তাই বন্দরের পুরোনো গোলায় এসব রাসায়নিক স্থানান্তর করা হচ্ছে।

হঠাৎ বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সামাল দেওয়ার সামর্থ্য নেই বন্দরের। ফলে কর্তৃপক্ষ নিলাম, ধ্বংস ও কন্টেইনার সরানোর মাধ্যমে নিরাপদ রাখতে চায় বন্দরকে।

জানা যায়, ১৯৯২ সালে আনা ৩০ বছরেরও পুরোনো বিপজ্জনক পণ্যের চালান পড়ে আছে চট্টগ্রাম বন্দরে। বন্দরের তালিকা অনুযায়ী, ২০৯ বিপজ্জনক কন্টেইনারের মধ্যে বন্দরের ৩ নম্বর ইয়ার্ডে ১টি, ৭ নম্বর ইয়ার্ডে ৫টি, ৮ নম্বর ইয়ার্ডে ৫৫টি, জেআর-এ ৬টি, সিসিটি-এ ২৬টি, এনসিটি-এ ৯০টি, ওভার ফ্লো ইয়ার্ড-এ ১০টি, এসসি ইয়ার্ডে ১৬টি বিপজ্জনক কন্টেইনার রয়েছে।

গত শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের পর টনক নড়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের। এরপর বন্দরের ইয়ার্ডে থাকা পণ্য নিয়ে আবার নাড়াচাড়া শুরু হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টমসকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে বন্দর থেকে। এরপর সোমবার (৬ জুন) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের ৩০ টন চালান স্পট নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা নেয়।

মঙ্গলবার (৭ জুন) বন্দরের ৭ নম্বর ইয়ার্ডে ১০ বছর আগে আমদানি করা একটি জীর্ণশীর্ণ কন্টেইনারে থাকা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড থেকে ধোঁয়া বের হয়। পরে সেটিও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।

২০২০ সালে লেবাননের বৈরুত বন্দরে বিপজ্জনক পণ্যের বিস্ফোরণ হওয়ার পর দেশের বিপজ্জনক কিছু পণ্য সিলেটের সুনামগঞ্জের একটি সিমেন্ট কারখানায় নিয়ে ধ্বংস করা হয়। পরে এ উদ্যোগ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বন্দরকে নিরাপদ রাখতে হলে বিপজ্জনক রসায়নিকের কন্টেইনার ইয়ার্ড থেকে সরানো প্রয়োজন।

এদিকে সীতাকুণ্ডে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বিস্ফোরণের পর বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় চিঠি চালাচালি করে বিপজ্জনক পণ্য সরানো নিয়ে। বন্দরের নানামুখি তৎপরতার কারণে কাস্টমস বিপজ্জনক পণ্যগুলো নিলাম ও ধ্বংসের জন্য তৎপরতা শুরু করে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এসব রাসায়নিক কন্টেইনারের ফাঁকফোকর দিয়ে যদি বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন বিক্রিয়া শুরু করে। ওই সময় ধোঁয়া বের হওয়া স্বাভাবিক। তবে কোনো ধরনের বিপদ আসার আগেই আমাদের সতর্ক থাকা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘বন্দরের পুরাতন গোলায় রসায়নিকের কন্টেইনার সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে খুব শিগগিরই। নতুন অকশন শেডেও বিপজ্জনক কন্টেইনার নিয়ে আসা হবে। বন্দরকে বিপদমুক্ত রাখতে যা করণীয় সব করা হবে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!