বন্দরে ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য: ১৯ প্যাকেজ নেবে না চায়না পাওয়ার

চট্টগ্রাম বন্দরে মেশিনারি পণ্যের সাথে মদ ও ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য নিয়ে আসার ঘটনায় আমদানিকারক চায়না পাওয়ার ১৯টি প্যাকেজ পণ্য না নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড়ের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) চায়না পাওয়ারের ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) মো. মিজানুর রহমান কাস্টম কমিশনার বরাবর দুটি আলাদা চিঠি দিয়েছেন।

বন্দরে আটক হওয়া মোট ৮ চালানের মধ্যে ২ চালানে পাওয়া যায় মদ, বিয়ারসহ চাইনিজদের নানা খাদ্যপণ্য। ইতোমধ্যে ৬ চালানের ২৪২টি প্যাকেজ মেশিনারি পণ্য খালাসের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বা তার পরবর্তী দুয়েকদিনের মধ্যে ওই ২৪২টি প্যাকেজ পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করে পায়রা বন্দরে নির্মিতব্য পাওয়ার প্লান্টে নিয়ে যেতে পারবে চায়না পাওয়ার।

অবশ্য শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করতে গিয়ে এই ৬ চালানের মধ্যে তিনটিতে ঘোষণার বাইরে কিছু মেশিনারি পণ্য পায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেজন্য তিন চালানে ৭ লাখ, ৪ লাখ এবং ৬০ হাজার টাকাসহ মোট ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ৬ চালানের ২৪২টি প্যাকেজ মেশিনারি পণ্যে ডেলিভারির বিষয়টি ফায়সালা হলেও বাকি ২ চালানের ৪২৭টি প্যাকেজ পণ্যের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। যদিও ৪২৭ প্যাকেজ পণ্যের মধ্যে ১৯টি প্যাকেজ পণ্য নিয়ে যাবে না বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছে চায়না পাওয়ার।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, মেশিনারি পণ্যের ঘোষণা দিয়ে মদ বিয়ার সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আসার ঘটনায় জরিমানা করা হবে আমদানিকারক চায়না পাওয়ারকে। তাদের পণ্য না নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমলে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে আরো কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

এদিকে চায়না পাওয়ারের ওই চালানগুলোর খালাসের দায়িত্বে থাকা সিএন্ডএফ এজেন্ট বিপাশা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ব্বাধিকারী শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, ‘ইতোপূর্বে চায়না পাওয়ার মেশিনারি পণ্যের সাথে ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য নিয়ে আসার বিষয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে। এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চালানগুলো খালাস করা গেলে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত হবে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, ‘চায়না পাওয়ার তাদের চালানে নিয়ে আসা মদ বিয়ার ও ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য না নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। বর্তমানে আমি এনবিআরের একটি সভায় যোগদানের জন্য ঢাকায় আছি। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

চায়না পাওয়ার যেসব পণ্য নিয়ে যাবে না সেগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিলামে তোলা হবে। মদ ও বিয়ার পর্যটন কর্পোরেশনের কাছে বিক্রয়ের বিধান আছে। যদি সেরকম কিছু না হয় কাস্টমস আইন অনুযায়ী ধ্বংস করা হবে।

প্রসঙ্গত চীনের সাংহাই থেকে আট চালানে ৬৬৯টি প্যাকেটে এক হাজার ৪০৬ মেট্রিক টন ক্যাপিটাল মেশিনারিজ নিয়ে এমভি কিউ জি শান নামের একটি মাদার ভ্যাসেল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। বন্দরের ৩ নম্বর জেটিতে বার্থিং নেওয়ার পর বার্জ খালাস করার সময় মদ, বিয়ারসহ খাদ্যসামগ্রী থাকার বিষয়টি উদঘাটিত হয়। গত ২৩ জুলাই পণ্য খালাসকালে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে আটক হয় চালানটি।

এরপর শতভাগ কয়িক পরীক্ষা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে ১৪ হাজার ৪০০ বোতল বিয়ার, ১ হাজার ৯৬ বোতল ওয়াইন (মদ), ২০ হাজার শলাকা (১০০ কার্টন) সিগারেট, ১০ টন চাইনিজ খাদ্যপণ্য, টাইলসসহ বিভিন্ন ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য নিয়ে আসার প্রমাণ পায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!