বন্দরে কনটেইনার খালাসে ফল আমদানিকারকদের গাফিলতি

চট্টগ্রাম বন্দরে আনলোড হওয়া এফসিএল (ফুল কনটেইনার লোড) খালাসে ফল আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। এতে একদিকে বন্দরের কনটেইনার জট বাড়ছে অন্যদিকে বাজারে ফলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে বিদেশি ফলের দাম। বন্দর কর্তৃপক্ষ ফল ব্যবসায়ীদের বার বার তাগাদা দেওয়া সত্বেও আশানুরূপ ফলবাহী কনটেইনার খালাস করছেন না বিদেশি ফল আমদানিকারকরা।

বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, ‘রমজান উপলক্ষে আমদানি ছাড়াও ফলবাহী ৫০-৬০ কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে। ব্যবসায়ীরা বন্দরে কনটেইনার রেখে দিয়ে ফলের দাম বাড়াতে চান। এ ব্যাপারে আমদানিকারদের কাস্টম থেকে চাপ প্রয়োগ করা উচিত।’

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন জাহাজে করে ফল আমদানিকারকদের অনুকূলে চট্টগ্রাম বন্দরে যে পরিমাণ এফসিএল কনটেইনার এসেছে তা অনুযায়ী এফসিএল কনটেইনার ডেলিভারি হচ্ছে না। ফলে বন্দরে এফসিএল কনটেইনারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্দরে ৩৪ হাজার ৮৬৮ টিইইউএস এফসিএল কনটেইনার ধারণ ক্ষমতার স্থলে বর্তমানে ২৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনার রয়েছে।

জানা গেছে, রমজান উপলক্ষে আমদানিকৃত সতেজ ফল পণ্যবাহী এফসিএল কনটেইনার দ্রুত ডেলিভারি নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ফ্রেশ ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন এবং চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতিকে সম্প্রতি দুটি দাপ্তরিক পত্র দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজার।

ওই সব পত্রে ফল আমদানিকারকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে রমজান মাস উপলক্ষে ইতোমধ্যে ছোলা, খেঁজুর, সতেজ ফলমুল, আদা, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি পণ্যবাহী বিপুল পরিমাণ কনটেইনার ডেলিভারির অপেক্ষায় আছে। তার মধ্যে আনুমানিক ৬৪৪ টিইইউএস কনটেইনারবাহী সতেজ ফলমুল চট্টগ্রাম বন্দরে ডেলিভারির অপেক্ষায় পড়ে আছে।’

পত্রে এ সকল সতেজ ফল পণ্যবাহী এফসিএল কনটেইনার বন্দর থেকে খালাস করা না হলে বাজারে ওই সব ভোগ্য পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।

পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সরবরাহে ঘাটতির কারণে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে জনসাধারণের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। রমজান মাসে খাদ্যদ্রব্যের বাজার স্থিতিশীল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরে স্থিত এসব সতেজ ফল পণ্যবাহী এফসিএল কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়া প্রয়োজন।

চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সুষ্ঠু ও গতিশীল রাখতে বন্দর থেকে সতেজ ফল পণ্যবাহী এফসিএল কনটেইনার দ্রত ডেলিভারি নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্রে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুট ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন এবং চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজার।

এ ব্যাপারে নাম প্রকান না করার শর্তে বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজারের দপ্তরের এক কর্মকর্তা শুক্রবার (১৭ মে) বিকালে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কনটেইনার দ্রুত খালাস করার জন্য ফল আমদানিকারকদের দুটি সংগঠনকে পর পর দুইবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কনটেইনারগুলো দ্রতি ডেলিভারি নিলে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সহজ হয়। কনটেইনার যত দ্রুত ডেলিভারি হবে, সবার জন্যই তত ভালো। পণ্য সহজলভ্য হবে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হবে না।’

কনটেইনার খালাসে ফল আমদানিকারকের ধীর গতির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি তেমন জানি না। তবে ফলবাহী কনটেইনার দ্রুত খালাস করা উচিত। ফল আমদানিকারকদের আমি এই আহ্বান জানাই।’

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!