দাবি পূরণের আশ্বাসে নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহার

ধর্মঘটে স্তব্ধ ছিল বন্দরের বহির্নোঙ্গর ও জেটি

শেষপর্যন্ত দাবি পূরণের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। রোববার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হয় ধর্মঘট। এতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তি হয়। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ব্যাহত হয় পণ্য ওঠানামা।

ধর্মঘটের মুখে শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকাল ৩টা থেকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একেএম মিজানুর রহমান শ্রম ভবনে লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে নীতিগতভাবে শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়ায় ফেডারেশনের নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, “শ্রমিকদের খাবার ভাতা ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে কার্যকর করা হবে এবং অন্যান্য দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সেই আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

নৌযান শ্রমিকদের ডাকা লাগাতার ধর্মঘটে শনিবার অচল হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বন্দর। শনিবার সকাল থেকে কোনো পণ্য ওঠানামা হয়নি। কর্ণফুলীতে অবস্থিত জেটিতে কাজ বন্ধ থাকে। এতে বন্দর থেকে সারাদেশের নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। কর্ণফুলীতে নোঙ্গর করে রাখা হয় লাইটারেজ জাহাজগুলো। শ্রমিকরা কাজ না করায় কার্যত বন্ধ থাকে লাইটারেজের কাজ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম বন্দরের পার্শ্ববর্তী ১৬টি ঘাটে অলস বসে থাকে শত শত লাইটারেজ জাহাজ এবং অয়েল ট্যাংকার। অথচ এসব জাহাজের ব্যস্ত থাকার কথা ছিল বন্দরের বহির্নোঙ্গরে মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাসের কাজে।

বন্দরের বহির্নোঙ্গরে বর্তমানে পণ্যবাহী জাহাজ রয়েছে ৭৮টি। এর মধ্যে ৪৯টি পণ্য খালাসের অপেক্ষায় ছিল। বাকি ২৯টি ছিল পণ্য খালাসের শিডিউল নেওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু শনিবার সকাল ৮টার পর থেকে কোনো লাইটারেজ জাহাজই বহির্নোঙ্গরে যায়নি। এমনকি আগে থেকে পণ্য খালাসে থাকা জাহাজগুলো ও খালাস শেষ না করে ঘাটে ফিরে আসে।

চট্টগ্রাম ডব্লিউটিসির কো-কনভেনার শফিক আহমেদ বলেন, ‘আমদানিকারকদের ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। এক এক মাদারশিপে ১০-১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ডেমারেজ আছে। এই মাল আনলোড বন্ধ থাকলে সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষতি হয়।’

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নৌপথে মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকলে এর প্রভাব পুরো দেশের উপর পড়ে।’

এএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!