‘বদিমুক্তি আন্দোলন’র নেপথ্যে সহানুভূতি আদায়ের অপকৌশল

শাহেদ ইমরান মিজান, কক্সবাজার।

কারাদন্ডপ্রাপ্ত বিতর্কিত সাংসদ আবদুর রহমান বদির মুক্তির দাবিতে ‘বদিমুক্তি আন্দোলন’ নিয়ে সরব রয়েছে উখিয়া-টেকনাফের একটি পক্ষ। এই পক্ষে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মীও রয়েছে।

bodi

গত মঙ্গলবারও টেকনাফে গণসমাবেশ করেছে এই পক্ষটি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ এর সভাপতিত্বে টেকনাফ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম বাহাদুরের সঞ্চালনায় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগেও দু’উপজেলাতে আরো মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। এছাড়াও বদির ‘নি:শর্ত মুক্তি চাই’ সম্বলিত নানা ব্যানার-পোষ্টার সাঁটানো হয়েছে।

 

এইসব পোষ্টার আবার স্থানীয় গণমাধ্যমেও বিজ্ঞাপন হিসাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব প্রকাশ পাচ্ছে। নানাভাবে বিবৃতি অনেকে পত্রিকায় বদির মুক্তি চেয়ে বিবৃতি দিচ্ছে।

 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বদির পরিবারের লোকজনের সমন্বয়ে বদির কাছে থেকে সুবিধা নেয়া একটি পক্ষ বদিকে মুক্ত করতে এজেন্ডাভিত্তিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আদালতকে প্রভাবিত করে সহানুভূতি আদায়ে এই পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনার অংশ হিসাবে উখিয়া-টেকনাফের নি¤œশ্রেণির নারী-পুরুষকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে রাস্তায়। করা হচ্ছে সভা-সমাবেশ।

 

‘উখিয়া-টেকনাফের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানার দিয়ে এসব কর্মসূচী করা হচ্ছে। সেখানে রয়েছে শরণার্থী ক্যাম্পের বিপুল রোহিঙ্গাও। সচেতন মহল দাবি করছেন, জনদরদি দেখিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করতে এসব করা হচ্ছে।

 
জানা গেছে, আবদুর রহমান বদির ভাই মুজিবুর রহমান এসব এজেন্ডা বাস্তবায়নের নায়ক। আর মাঠে কাজ করছেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জাফর আহমদ, টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম বাহাদুর। উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির।

 

এছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা কাজ করছে। তাদের সাথে রয়েছে বেশ কিছু তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারী।

সরকারি দলের সাংসদ হলেও ‘বদিমুক্তি আন্দোলন’ নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠন। তারা এই নিয়েও বিরোদ্ধাচরণ করে আসছে। তবে দলীয় পদধারী কিছু নেতা ‘বদিমুক্তি আন্দোলন’ নিয়ে সরব রয়েছে। দলের নীতিনির্ধারকরা জানিয়ে আসছেন, দলের যারা ‘বদিমুক্তি আন্দোলন’ করছে তারা সবাই ‘বদিলীগ’। আদালতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তাদেরকে হুঁশিয়ারী করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ, সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উখিয়া-টেকনাফ আসনের সরকারি দল আওয়ামী লীগের দলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে ৩ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সেই সাথে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো তিনমাসের কারাদন্ড দিয়েছে। তবে তা আপিলের সুযোগ রয়েছে।

 

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!