বদলি হলে দায়িত্ব না ছাড়া ওসি সাইরুলের অভ্যাস!

বদলির চার দিনেও দায়িত্ব হস্তান্তর করছেন না বির্তকিত হওয়া বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইরুল ইসলাম।

সোমবার (৮ জুলাই) ওসি পদ থেকে তাকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি আদেশ দিয়ে বোওয়ালখালীতে শেখ নেয়ামত উল্লাহকে পদায়ন করেছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) নুরে আলম মিনা। কিন্তু বুধবার (১০ জুলাই) দায়িত্ব বুঝে নিতে গিয়েও দীর্ঘক্ষণ থানায় বসে থেকে ‘হাজিরা জিডি’ করে ফেরত আসেন পুলিশ লাইনে সংযুক্ত নেয়ামত উল্লাহ।

এর আগেও ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে সিএমপির চান্দগাঁও থানা থেকে পদ হারিয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি করেছিলেন সাইরুল ইসলাম। পরে চার দিনের মাথায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ওই সময় শাহজাহান কবীরকে ওসির দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

জানা যায়, বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে বোয়ালখালীতে পদায়ন হওয়া শেখ নেয়ামত উল্লাহ থানায় যান। আগে থেকে সাইরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে থানায় গেলেও উপস্থিত ছিলেন না তিনি। পরে থানার পরিদর্শক (তদন্ত)সহ অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে নেয়ামত উল্লাহ একটি ‘হাজিরা জিডি’ করে ফেরত আসেন। সাইরুল থানায় না থাকলেও সরকারি নম্বরটি পরিদর্শককে (তদন্ত) দিয়ে আসেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওসি সাইরুল অসুস্থতার ছুটি নিয়ে সরকারি নম্বর তার কাছে দিয়ে শহরে অবস্থান করছেন। এর বেশি মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

নবাগত ওসি শেখ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘আমি বদলির আদেশ নিয়ে বুধবার থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু ওসি সাইরুলের সঙ্গে কথা হলেও তিনি ছিলেন না। পরে আমি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে ফেরত আসি। এখন উনি যখন দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন তখন চার্জ বুঝে নেব।’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলার এসপি নুরে আলম মিনা দুপুরে বলেন, ‘এই ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আর বদলি আদেশ হলো রীতি অনুযায়ী বিদায় ও বরণের বিষয় আছে। হয়তো দুয়েক দিনের মধ্যে সেটা সম্পন্ন হবে।’

প্রসঙ্গত, শেখ নেয়ামত উল্লাহ এর আগে দীর্ঘ আড়াই বছর পটিয়া থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। এর আগে চন্দনাইশ থানায়ও ওসি পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

উল্লেখ্য, দক্ষ ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নেয়ামত উল্লাহ পুলিশ বাহিনীতে প্রশংসিত। অন্যদিকে ওসির পদ হারানো সাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বোয়ালখালীতে যাওয়ার পর থেকে জুয়ার আসর বসানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। তার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত নামে দুদকও। দুদকে এক নারীর জমা পড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সাইরুল ইসলামের একান্ত অনুগত কিছু পুলিশ সদস্য রয়েছে। ওসি সাইরুলের যে থানায় যোগ দেন তাদেরও একই থানায় বদলি করে নিয়ে যান। ওই পুলিশ সদস্যরা ওসি
সাইরুলের ‘টাকা আয়ের মেশিন’ হিসেবে কাজ করেন বলে দুদকে অভিযোগ করেছেন আয়শা আকতার কাকলী নামে ওই নারী।
এর আগে ২০১৫ সালে নগরের চান্দগাঁও থানায় ওসি সাইরুলের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে ফাঁদে ফেলে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়, মাদক দিয়ে মামলায় জড়ানো, টাকার বিনিময়ে অব্যাহতি দেয়া, দুর্ব্যবহার, ধরে নিয়ে গুলি করাসহ বেশকিছু অভিযোগ ওঠে।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!