বঙ্গবন্ধুর ব্যানার ছেঁড়া ‘নেতা’ মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের নতুন আহ্বায়ক

মোবাইল চুরি করে খেয়েছিলেন গণপিটুনিও

চট্টগ্রামের হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজে ছাত্রলীগের ২৪ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে এমন বিতর্কিত একজনকে— যিনি মাত্র কিছুদিন আগে কলেজের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর ব্যানার ছিঁড়ে সমালোচিত হয়েছিলেন। তারও আগে মোবাইল চুরি করে খেয়েছিলেন গণপিটুনিও। এই আহ্বায়কের নাম কাজী নাঈম।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কাজী নাঈমকে আহবায়ক করে হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।

কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিতর্কে অনেকেই এভাবে বিতর্কিত ব্যক্তিদের রেখে কমিটি গঠনের সমালোচনায় মুখর। অনেকেই বলছেন, বঙ্গবন্ধুর ব্যানার ছেঁড়ার অপরাধের পুরস্কার হিসেবে কাজী নাঈম পেলেন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পদ। কাজী নাঈম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের অনুসারী।

কাজী নাঈমের বিরুদ্ধে শুধু বঙ্গবন্ধুর ব্যানার ছেঁড়াই নয়, রয়েছে মোবাইল চুরির অভিযোগও। ২০১৭ সালে মোবাইল চুরির অপরাধে গণধোলাই খেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতেও দেখা যায় এই নেতাকে। কলেজে বহিরাগতদের নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি ও শিবির কর্মীদের ছাত্রলীগ বানিয়ে নিজের গ্রুপে অনুপ্রবেশের জন্য একাধিকবার খবরের শিরোনামও হন এই ছাত্রলীগ নেতা।

এ বিষয়ে কথা বলতে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দস্তগীরকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

কমিটি নিয়ে এমন কাণ্ডে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ক্ষোভের সুরে বললেন, ‘মহসিন কলেজ শিবিরমুক্ত করার সময় যারা ছিলে কিন্তু আজ বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার যাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে তাদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার জন্য তোমাদের আজ এ পরিণতি। আমি বিশ্বাস করি, মহিউদ্দিন ভাই ঐ পাড় থেকে সবকিছু দেখছেন।’

ক্ষোভের সুরে মহসিন কলেজ কমিটির সদ্য নির্বাচিত এক সদস্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে অপমান করার মত একটি গুরুতর অপরাধ করেও ন্যূনতম শাস্তি না দিয়ে উল্টো তাকে ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেওয়া হল, এতে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা হতাশই হয়েছেন। নিজেদের কমিটি ভেঙে যাওয়ার আভাস শুনে একদিনেই তড়িঘড়ি করে টাকার বিনিময়ে মহসিন কলেজ সহ থানা, ওয়ার্ড মিলে ১৩টি কমিটি অনুমোদন দিয়েছে মহানগর ছাত্রলীগ। একদিনে এতগুলো কমিটি অনুমোদন দেওয়াটাও একটা রেকর্ড।’

এর আগে চট্টগ্রাম কলেজে মাহমুদকে সভাপতি ও সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দিয়ে বির্তকের মুখে পড়ে মহানগর ছাত্রলীগ। অছাত্র, বহিরাগত ও বিএনপি কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগ ওঠে ইমু-দস্তগীরের বিরুদ্ধে। ইয়াবা ব্যবসার দায়ে জেল খাটা ও চট্টগ্রাম কলেজে না পড়েও সেই কমিটিতে স্থান হয়েছিলো একাধিক বিতর্কিত নেতার। ওপরমহলের নেতাদের ও ‘মাই ম্যান’দের কমিটিতে আনতে বির্তকিত কমিটি দিয়ে এবার বিতর্কিত কমিটি দেওয়া হল মহসিন কলেজে— এমন অভিযোগ নেতাকর্মীদের।

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!