ফ্লাইওভার থেকে সরলো সিডিএর ফ্ল্যাট বিক্রির বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও সর্ববৃহৎ মুরাদপুর ফ্লাইওভারে শুলকবহরের দিকে ওঠার পথে সিডিএর বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যানার অবশেষে অপসারণ করেছে সিটি করপোরেশন। এ মাসের শুরুতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) তাদের নির্মাণাধীন ১৬৫টি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য পথ নির্দেশিকা ঢেকে ব্যানার টাঙিয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিন অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে সিটি করপোরেশনের। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমেদ এ প্রতিবেদককে ফোন করে বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ওই এলাকার নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। উনি মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে সিডিএর লাগানো বিজ্ঞাপনী ব্যানারটা অপসারণ করেছেন।’

উল্লেখ্য, মুরাদপুর ফ্লাইওভারটিতে শুলকবহরের দিকে ওঠার পথে পথ নির্দেশিকা ঢেকে দিয়ে সিডিএ স্কয়ারের ব্যানার টাঙিয়েছিল সিডিএ। এর ফলে এই ফ্লাইওভার ব্যবহারকারী অনেক গাড়িচালক দিগভ্রান্ত হচ্ছিলেন। ভুলপথে চলে গিয়ে অনেক পথ ঘুরে আসতে হতো। এ নিয়ে সাধারণ পথচারীসহ গাড়িচালকদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সিটি করপোরেশন এলাকাটি যখন অনেকটাই বিলবোর্ড ব্যানারমুক্ত, সেখানে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন বিজ্ঞাপনী ব্যানার টাঙানোর বিষয়টি বিষ্মিত নগরবাসী।

যদিও গত ১ ডিসেম্বর থেকে এই ফ্লাইওভারসহ চারটি ফ্লাইওভার আনুষ্ঠানিকভাবে সিডিএর কাছ থেকে বুঝে নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

ওই সময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেছিলেন, ‘সাময়িকভাবে আমাদের নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য এসব ব্যানার টাঙিয়েছি। আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব ব্যানার ফ্লাইওভারের পথনির্দেশিকা ঢাকা অবস্থায় রাখার পর খুলে ফেলা হবে।’

সিডিএর ফ্ল্যাট বিক্রির বিজ্ঞাপনে এভাবে ঢেকেছিল মুরাদপুর ফ্লাইওভারের পথনির্দেশিকা
সিডিএর ফ্ল্যাট বিক্রির বিজ্ঞাপনে এভাবে ঢেকেছিল মুরাদপুর ফ্লাইওভারের পথনির্দেশিকা

অন্যদিকে ১ ডিসেম্বর নগরীর টাইগারপাসে চসিকের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে মুরাদপুর ফ্লাইওভারসহ চারটি স্থাপনা হস্তান্তর করা হয় সিডিএর পক্ষ থেকে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশেনের (চসিক) পক্ষে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফ্লাইওভার চারটি বুঝে নেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ফ্লাইওভারগুলো হচ্ছে মুরাদপুর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার, বহদ্দারহাট এমএ মান্নান ফ্লাইওভার, কদমতলী ও দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত চার লেনের আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের মার্চে। ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ফ্লাইওভারটির মূল অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। শুরুতে পাঁচ দশমিক দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এ ফ্লাইওভারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৬২ কোটি টাকা। পরে ফ্লাইওভারের দুই নম্বর গেইট এলাকায় নতুন একটি লুপ এবং জিইসি মোড় এলাকায় আরও একটি র্যা ম্প যোগ হয়ে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯৮ কোটি টাকা। গত বছরের ১ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এ ফ্লাইওভারের এক হাজার ৩০০ মিটার দীর্ঘ লুপটিও।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!