ফেসবুক প্রেমে চট্টগ্রামের কিশোরী সিলেটের রাজমিস্ত্রির প্রতারণার ফাঁদে

ছবি ভাইরালের হুমকিতে বাধ্য করা হয় সিলেট যেতে

সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া চট্টগ্রামের কিশোরীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় সিলেটের সুজন মিয়ার সঙ্গে। পরিচয় আর একটু গভীর হতেই হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে চলতে থাকে সশরীর দেখাদেখি। সেটা দ্রুতই রূপ নেয় প্রেমে। কিন্তু না, পেশায় রাজমিস্ত্রি চতুর সুজন মিয়ার চাই আরও কিছু। সেই সূত্র ধরে বিনিময় হয় ব্যক্তিগত মহূর্তের খোলামেলা ছবি। দিনের পর দিন।

এই ছবি বিনিময় করেই সুজনের ফাঁদে পড়ে যায় চট্টগ্রামের ওই ১২ বছরের কিশোরী। সুজন তাকে প্রস্তাব দেয়, সিলেটে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য। সুজন টোপ ফেলে এও জানায় যে, যদি সে সিলেটে যায় তাহলে তার কথিত বান্ধবী তানিয়ার বাসায় একত্রে থাকার ব্যবস্থা করে দেবে।

কিশোরীটি চট্টগ্রামের একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। অন্যদিকে ২৫ বছর বয়সী সুজন মিয়া জীবনে কখনও স্কুলের চৌকাঠই পেরোয়নি। অচেনা একটি জায়গায় কিভাবে যাওয়া সম্ভব— এই ভেবে কিশোরী রাজি হয় না। প্রতারক সুজন তখনই আত্মপ্রকাশ করে স্বরূপে। সোজাসুজি সে বলে দেয়, সিলেট যেতে রাজি না হলে মেয়েটির পাঠানো একান্ত মুহূর্তের সব ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হবে ফেসবুকে।

এমন হুমকিতে ভয় পেয়ে যায় কিশোরী। গত শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বলে যায়, চট্টগ্রামের অনন্যা আবাসিক এলাকায় ঘুরতে যাচ্ছে। এরপর অনেকটা জীবনবাজি রেখে চট্টগ্রাম থেকে সিলেট চলে যায় সে। কিন্তু সেখানে গিয়েই প্রতারক সুজনের আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। তখন ওই কিশোরীর কিছু করার উপায় আর নেই। সুজন তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হতে বাধ্য করে কিশোরীকে।

এদিকে চট্টগ্রামের বাসায় কিশোরীকে ফিরে আসতে না দেখে তার স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এর একপর্যায়ে মেয়েটির মামা র‌্যাব-৭ কে বিষয়টি জানান।

এরপরই র‌্যাব কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। জাল ফেলে প্রযুক্তিরও। তাতে কাজও হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব জানতে পারে, চট্টগ্রামের ওই কিশোরী সিলেট রেলওয়ে থানা এলাকায় অবস্থান করছে।

অবস্থান শনাক্ত করার পরপরই শনিবার (১ জানুয়ারি) র‌্যাব অভিযান চালায় সিলেটের ওই এলাকায়। কিশোরীকে উদ্ধার করার পাশাপাশি প্রতারক ও ব্ল্যাকমেইলার সুজন মিয়াকে (২৫) আটক করা হয়। তখন জানা যায়, এই সুজন সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার ঐহারদাশের দিলু মিয়ার ছেলে। লেখাপড়া জানে না। পেশায় সে মূলত রাজমিস্ত্রি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নিয়াজ মোহাম্মদ চপল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, আসামি সুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আইএমই/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!