ফেসবুক প্রেমিকাকে বছরভর ‘ধর্ষণ’, মামলার জালে হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজী

ফেসবুকে পরিচয়, হোয়াটসঅ্যাপে প্রেম

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকে এক নারীর সাথে পরিচয় হয় হেফাজতে ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর। ম্যাসেন্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে আলাপচারিতার মাঝে তাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। এরই মধ্যে নোমান ফয়েজী ফেলেন বিয়ের টোপ। ওই নারীকে আসতে বলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে।

টোপ গিলে নারী একসময় চলে আসেন হাটহাজারী। ২০১৯ সালের নভেম্বরে হাটহাজারীর কনক বিল্ডিংয়ের নিচতলায় নোমান ফয়েজী ওই নারীকে একটি ভাড়া বাসায় রাখেন। এরপর দীর্ঘ ১ বছর ধরে সেই বাসায় ওই নারীকে ধর্ষণ করেন নোমান ফয়েজী।

পরে ওই নারী হাটহাজারী থেকে চট্টগ্রাম শহরে খালার বাসায় চলে আসার পরও বিভিন্ন বাসা ও হোটেলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন হেফাজতে ইসলামের ওই কেন্দ্রীয় নেতা।

ওই নারী নোমান ফয়েজীর প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজে বাদী হয়ে শুক্রবার (৭ মে) দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানায় নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

হাটহাজারী থানায় মামলাটি (নং ৯ তাং ০৭/৫/২০২১) নেওয়া হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) ধারায়।

হাটহাজারী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুকিব হাসান মামলাটি তদন্ত করছেন।

বুধবার (৫ মে) হাটহাজারীতে নাশকতার মামলায় কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন নোমান ফয়েজী।

পরে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম রশিদুল হক বলেন, ‘নোমান ফয়েজীকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে আমরা একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করেছি। ওই মোবাইল সেটের সূত্র ধরে আমরা জানতে পারি, কিছু নারীর সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। যেটাকে আমরা এক্সট্রা ম্যারিটাল রিলেশন ও এক্সটা মেরিটাল ফিজিক্যাল রিলেশন বলি। ২ থেকে ৩ জনের সাথে এমন সম্পর্ক ছিল তার।’

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের তথ্য আমাদের কাছে আগেও ছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এবং বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক তথা দুই ধরনের সম্পর্কের কথা তিনি স্বীকার করেছেন।’

তবে আপাতত তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু প্রকাশ করতে চান না জানিয়ে এসএম রশিদুল হক বলেন, ‘তার মোবাইল থেকে আমরা বেশকিছু চ্যাট (কথোপকথন) পেয়েছি, যাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। আমাদের হাতে সেগুলো আছে, তবে তদন্তের স্বার্থে সেগুলো প্রকাশ করছি না।’

জাকারিয়া নোমান ফয়েজী এসব সম্পর্কের কথা নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি এবং বলেছি আপনার যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং আপনি যে পোশাক পরেন সেটির সঙ্গে আপনার এই চরিত্র যায় কি-না? তখন তিনি বলেছেন মানুষমাত্রই ভুল হয়।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!