চট্টগ্রামে ভিন্ন ভিন্ন নামে একাধিক বিয়ে করে প্রতারণার ঘটনায় মিনু আক্তার ওরফে সুমি ওরফে ফাতেমা ওরফে রোমানাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দীনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নাছমিন আক্তার সিমু নামে আত্মসমর্পণ করলেও তার নাম কখনো মিনু, কখনও সুমি, কখনও ফাতেমা আবার কখনও রোমানা। এসব নামের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন রয়েছে; তেমনি রয়েছে একাধিক নামে একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নাগরিক সনদপত্রও।
মামলার বাদী প্রবাসী ইমাম হোসেনের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, মিনু আক্তার কয়েকটি এনআইডি কার্ড এবং বিভিন্ন নামে নাগরিক সনদ বানিয়ে বৈবাহিক প্রতারণাসহ ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন নামে অ্যাকাউন্ট খুলে দেশি ও প্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এক নারীর অন্তত ৪টি ভিন্ন নামের পরিচয়পত্র, তিনজন বৈধ স্বামী, বৈবাহিক সম্পর্ক বলবত থাকা অবস্থায় অন্য পুরুষকে বিয়ের ডকুমেন্ট আদালতের নজরে আনার জন্য দাখিল করা হয়েছিল। তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রতারক মিনু আক্তার, মোস্তফা জামিল (৩৭) ও রাশেদকে (৩৯) আসামি করে প্রবাসী ইমাম হোসেন আদালতে মামলা করেন। মামলাটি বায়েজিদ থানাকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য আদালত আদেশ দিয়েছিলেন। ওই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত সোমবার আসামি রাশেদ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
মামলার কাগজপত্র ও অভিযোগপত্রের তথ্যে দেখা যায়, ২০০৮ সালে তৈরি করা একটি জাতীয় পরিচয়পত্রে ওই নারীর নাম মোছা. ফাতেমা খাতুন (জাতীয় পরিচয়পত্র নং-১৯৮৯৮৮১২৭২৭১৭০৫২৪)। স্বামী হিসেবে জনৈক লুৎফর রহমান এবং মা হিসেবে শামসুন নাহারের নাম রয়েছে।
২০২০ সালের একটি জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায়, এই একই নারীর নাম নাছমিন আক্তার সিমু (জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৩৭৬৪৬৬৭০৫৫), বাবার নাম মো. আলী আহাম্মদ ও মায়ের নাম শামসুন নাহার। অন্য একটি নাগরিক সনদপত্রে আবার দেখা যায়, বাবা-মায়ের নাম ঠিক রেখে একই নারীর নাম উল্লেখ রয়েছে মিনু আক্তার। ওই নারীই আবার বাবা-মায়ের নাম এবং নিজের ঠিকানা একই রেখে ঢাকার সাফা সোয়েটার লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন ফাতেমা আক্তার রোমানা নামে।
২০০৮ সালের কোনো একসময়ে বিয়ে করেন টাঙ্গাইলের লুৎফর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে। সেই সংসারে একটি সন্তানও রয়েছে। ২০০৮ সালের একটি এনআইডি কার্ডে দেখা যায়, তার স্বামীর নাম লুৎফুর রহমান। একই নারী মিনু আক্তার নাম ধারণ করে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইমাম হোসেন নামে এক প্রবাসীকে বিয়ে করেন। কাতারপ্রবাসী ওই ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থাতেই আবার ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করেন মোস্তফা জামিল নামে এক ব্যক্তিকে।
এছাড়া একাধিক প্রতিষ্ঠানে ছদ্মনাম এবং ভিন্ন ভিন্ন নামের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে একাধিক চাকরিও করেছেন মিনু আক্তার।