ফেসবুকে চট্টগ্রামের যুবকের প্রতারণার ফাঁদ, অগ্রিম টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিতেন

ফেসবুকে পেইজ খুলে চীনের বিভিন্ন পণ্য বিক্রির অফার দিয়ে অনলাইনে অর্ডার নিতেন তিনি। টার্গেট ক্রেতাদের বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মেসেঞ্জারে পাঠাতেন চীনের ভিসা ও নিজের পাসপোর্টের ছবিও। এভাবে অর্ডার পাওয়ার পর বিকাশে অগ্রিম হিসেবে নিতেন পণ্যের মূল্যের অর্ধেক টাকা। ঠিক এরপরই তিনি পাল্টে ফেলেন মোবাইল নম্বর। এভাবে টাকা হাতানোর খেলা চলছিল তার দিনের পর দিন।

শেষ পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে প্রতারক এসএম তানভিরুল আলমকে (২৫) শনিবার (১২ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৭। তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ছিপাতলী গ্রামে।

র‍্যাব জানিয়েছে, গত ১৭ জানুয়ারি একটি ফেসবুক গ্রুপে শীতের পণ্যের চাহিদা জানিয়ে পোস্ট করেন এক ব্যক্তি। প্রতারক তানভির সেই পোস্টে মন্তব্যের ঘরে ওই ধরনের পণ্য সহজেই সরবরাহ করতে পারবেন বলে জানান। সেজন্য ২০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানালে ওই ব্যক্তি দামের অর্ধেক ১০ হাজার ৭৫ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধও করেন।

কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুসারে গত ২ ফেব্রুয়ারি পণ্যের জন্য যোগাযোগ করলে তানভিরের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি এ সময় প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর তিনি নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি বিষয়টি জানান র‍্যাবকেও। র‍্যাবের ছায়াতদন্তের পর প্রতারক তানভিরুল আলমকে (২৫) শনিবার (১২ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানিয়েছে, বিকাশে টাকা নেওয়ার জন্য তানভির নিজের নম্বর ব্যবহার করতেন না। এর বদলে তিনি তার পরিচিত নিরক্ষর ও নিম্ন আয়ের লোকদের নম্বর ব্যবহার করতেন তিনি। তাদেরকে বলা হতো, চিকিৎসার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা টাকা পাঠিয়েছেন তানভিরকে।

খোঁজ নিয়ে র‍্যাব জানতে পেরেছে, তানভির ফেসবুক ব্যবহার করে তার প্রতারণামূলক কাজ করে আসছেন অনেকদিন ধরে। অনলাইনে পণ্য সরবরাহের নামে অগ্রিম নিয়ে মেরে দিয়েছেন বহু মানুষের লাখ লাখ টাকা। অনেক সময় আবার আসল পণ্য না দিয়ে পাঠাতেন আলু, পটল, পেঁয়াজ বা সাবানের মতো পণ্য।

র‌্যাব জানিয়েছে, ফেসবুকে ‘চায়নিজ প্রোডাক্ট ইমপোর্টার (হোলসেল, প্রি অর্ডার শিপিং ইন বাংলাদেশ)’ নামে একটি পেইজ আছে তানভিরের। ওই পেইজে তিনি চীন থেকে পণ্য আনার প্রচারণা চালাতেন। কেউ সেই পণ্য নিয়ে আগ্রহ দেখালে তার চীনের ভিসা ও নিজের পাসপোর্টের ছবি পাঠাতেন ব্যক্তিগত মেসেঞ্জারে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে শিক্ষা ভিসায় তানভীর চীনে যান। ২০২০ সালে তিনি দেশে ফিরে এসে প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!