ফাহাদের ফেসবুক স্ট্যাটাস বারবার পোস্ট করার আহ্বান খসরুর

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসটি বারবার নিজেদের ফেসবুক ওয়ালে প্রকাশ করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহবান জানালেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আবরার ফাহাদ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, দেশবিরোধী চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে জীবন দিয়েছেন। তার স্ট্যাটাস জাতির মুক্তির স্লোগান। ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী এই স্ট্যাটাস আপনাদের ফেসবুক ওয়ালে বারবার পোস্ট করুন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় নূর আহমদ সড়কের দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন মাঠে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তি এবং আবরার হত্যাকা-ের প্রতিবাদে নগর বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে নির্বাচিত সরকার রয়েছে। চুক্তি করার সময় ভারত তাদের জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করে। আমাদের সরকার দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে চুক্তি করে। কারণ তারা অনির্বাচিত। রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল করেছে। তাই দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

তিনি আরো বলেন, ক্ষমতার মালিক দেশের জনগণ। ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। চুরিতে ধরা খেয়ে সরকার নার্ভাস হয়ে পড়েছে। তাদের নার্ভাসনেস কাজে-কর্মে প্রতিফলিত হচ্ছে। জনতার আদালতে সাজার ভয়ে আজ তারা ভীত।

ক্যাসিনো ক্যালেঙ্কারি নিয়ে তিনি বলেন, আজ ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের হাতে শত কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে কত হাজার কোটি টাকা তার হিসাব কে করবে? তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন চলছে আওয়ামী অর্থনীতি। এখানে অর্থনীতির আর কোনো সূত্র প্রযোজ্য নয়।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাকসু এজিএস মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, দেশের সবচে’ জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে। তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সরকার তাঁর জামিন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে তাঁর মুক্তিতে গড়িমসি করছে। আবরার হত্যাকাণ্ড সর্বশেষ হত্যাকাণ্ড, প্রথম নয়। ছাত্রলীগের টর্চার সেল নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ক্যাম্পাস থাকবে শিক্ষার্থীদের অভয়ারণ্য। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই আজ ছাত্রলীগের হাতে জিম্মি। এ জিম্মিদশা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন বলেন, আবরার হত্যার বিচারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কথা বিশ্বাস করা যায় না। কারণ সাগর-রুনি, বিশ্বজিত ও চট্টগ্রামের আবিদ হত্যার বিচার আজো হয়নি। আওয়ামী লীগের এ বিচার করার ক্ষমতাও নেই।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মা হিসেবে আবরার হত্যার বিচার করবেন বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে তা জাতির সাথে প্রতারণা। আওয়ামী লীগের আমলে সন্ত্রাসীদের বিচার হয় না। খুনীদেরকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেন।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ভারতের সাথে দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই অবৈধ সরকার। এই অসম চুক্তি দেশের মানুষ মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি আলোচনার টেবিলে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন, এটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা না, বাংলাদেশের মানুষের লজ্জা।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, হাজী মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন জিয়া, নাজিমুর রহমান, আশরাফ চৌধুরী, মাহবুবুল আলম, অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, অধ্যাপক নুরুল আমিন রাজু, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আরইউ চৌধুরী শাহীন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, কাউন্সিলর আবুল হাসেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশা, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের নগর সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুুসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এফএম/সিআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!