ফাঁকা নগরে রিকশার দাপট, একই সিটে চেনা-অচেনা যাত্রী

করোনা ভাইরাসের কারণে নির্দিষ্ট পরিবহন ছাড়া সড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ থাকলেও সরকারের নিয়ম না মেনে ভিআইপি সড়কসহ রাস্তার অলিগলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রিকশা। রাস্তার মোড়ে গেলেই দেখা যায় রিকশার জটলা। রিকশা চলাচলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেশিরভাগ লোকই জরুরি প্রয়োজনের বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে এটি।

রিকশাওয়ালারাও এই সুযোগে আদায় করছে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ৪-৫ গুণ টাকা। অনেককে আবার কোলাহলমুক্ত ফাঁকা নগর পেয়ে রিকশায় চড়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।

সরেজমিনে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানার কাটগড় মোড়, স্টিল মিল, আলী প্লাজা, কর্ণফুলী ইপিজেড গেইট, বন্দরটিলা মোড়, সিইপিজেড মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং মোড়, কাস্টম, বিশ্বরোড, বারিক বিল্ডিং মোড়, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, টাইগারপাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেইটসহ নগরের অধিকাংশ সড়কে চলাচল করছে রিকশা। প্রায় প্রতিটি মোড়েই ১০-১৫টি রিকশা দেখা যায়।

এছাড়া সামাজিক দূরত্ব মানারও বালাই নেই রিকশা আরোহীদের। একই সিটে গাদাগাদি করে বসছে দুই-তিনজন যাত্রী। যাত্রীবাহী বাসের মতো বহন করছে পরিচিত-অপরিচিত লোকজন। চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় মোড়ে মোড় লোকজন উঠাতেও দেখা যায়।

ওয়াসার মোড় থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিকশা করে যাচ্ছিলেন একই পরিবারের দুইজন। তারা বলেন, অসুস্থ মাকে দেখতে যাচ্ছি হাসপাতালে যাচ্ছি। ভাড়া ৭০ টাকা। অন্য সময় নেয় ৩০ টাকা। কী করব, বাধ্য হয়ে যাচ্ছি।

নগরের বিশ্বরোড এলাকা থেকে চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় যাচ্ছিলেন একই সিটে দুই ব্যক্তি। দুজনের গন্তব্য জিইসি ও দুই নম্বর গেইট এলাকা। দুইজনই পরস্পর অপরিচিত। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ডিপোতে কাজ করি। প্রতিদিন এভাবে আসা-যাওয়া করছি। টাকা একটু বেশি নেয় রিকশাচালকরা। দুরত্ব মেনে কী হবে। করোনা আক্রান্ত হলে এমনিতেই হবে।

এ বিষয়ে নগর পুলিশ বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) তারেক আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ট্রাফিকের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট গাড়ি ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রতি মোড়ে মোড়ে রয়েছে চেকপোস্ট। বিচ্ছিন্ন কিছু রিকশা দেখা গেলেও সেগুলোকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যারা কথা শুনছে না তাদের রিকশার চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এদেরকে যতই বলি, আইন পালন করানো কঠিন।

তিনি আরও বলেন, যারা লকডাউন না মেনে রাস্তায় আসছে তারা রিকশায় না উঠলেই তো হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের স্বার্থে সবাইকে এই লকডাউন ও কোয়ারেনটাইন মানতে হবে। না হয় এই মহামারি থেকে কেউ রেহাই পাবে না।

মুআ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!