ফসলি জমিতে জোর করে হচ্ছে মাছ চাষ আনোয়ারার পারকিতে

কৌশলে ইজারা নেয়া ফসলি জমিতে বাঁধ দিয়ে পানি জমাট করে সেখানে মাছ চাষ করছে বলে অভিযোগ এনেছেন আনোয়ারার কৃষকেরা। প্রভাবশালী জালাল উদ্দিন শাহ নামে এক ব্যবসায়ী মাছ চাষ করছে জানিয়ে কৃষকেরা বলেন, মাছ চাষের ফলে ফসল উৎপাদন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী ব্যক্তি জালাল উদ্দিন শাহ্ এক সময়ের ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত কয়েক বছর আগেও কর্ণফুলী থানায় তিনি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন। এরপর জেল থেকে বের হয়ে পারকি এলাকায় গরু, মহিষ পালন, মাছ চাষ করছেন ছদ্মবেশে। অনেক সময় তিনি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সালিশি বৈঠকও করে থাকেন।

স্থানীয়রা বলেন, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ফুলতলী মৌজার পারকি বাজারের পশ্চিম পাশে নতুন বেঁড়িবাধ নির্মাণ হওয়ার পর একসময়ে শসা, তরমুজসহ বিভিন্ন সবজির ফসলি জমিগুলো বর্তমানে পুকুরে পরিণত। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কৃষি জমি না জলাশয়। কৃষি জমিতে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষে হুমকির মুখে পড়েছে কৃষকরা। গত বেশ কয়েক মাস ধরে জমিকে পুকুরের মত তৈরি করে চলছে মাছ চাষ।

কৃষকরা বলছেন, কৌশলে ফসলি জমি ইজারা নেয় তারা। নিরুপায় হয়ে অনেক মালিক জমি ইজারা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ফসলি জমি ছিল। এখানে শসা, তরমুজসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হতো। গত কয়েক বছর আগে জালাল উদ্দিন ইজারা নেয়। আমাদেরকে এক বছর ইজারার টাকা দিলেও এরপর থেকে আজ পর্যন্ত কোন টাকা দেয়নি। এখন ওই জমিতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে।’

অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন শাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি টাকা দিয়ে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছি। এখানে কোন ফসলি জমি ছিলো না কোন সময়ে। এখানে মাছ চাষ করলে কি সাংবাদিকদের টাকা দিতে হবে?’

রায়পুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, এটি রায়পুর ইউনিয়নের জায়গা হলেও পারকি এলাকার লোকজন ওই জায়গার মালিক। তবে মাছ চাষের বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করবো না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ফসলি জমিতে মাছ চাষ করতে হলে মাছ চাষের পাশাপাশি অন্য আবাদও থাকতে হবে। এছাড়াও ফসলি জমিকে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হবে। তবেই মাছ চাষ করা যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!