‘ফণী’ এখন বাংলাদেশের সীমান্তে, আঘাত হানবে মধ্যরাতে

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থান করছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ওপর ফণীর প্রভাব শুরু হয়েছে। এ কারণে দেশের সব অঞ্চলের আকাশ মেঘলা রয়েছে। আজ মধ্যরাতের পর ‘ফণী’ সারাদেশে আঘাত হানবে। ফণী বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় বাংলাদেশ সীমান্তের বাইরে থাকার পরও মূল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে সারাদেশে। আজ মধ্যরাতের পর এই ঝড় বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। আগামীকালও অব্যাহত থাকবে এই ঝড়।

ফণীর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর এখন উত্তাল। ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট বেড়েছে। এর ওপর চলছে অমাবস্যার প্রভাব। শুক্রবার জোয়ারের ধাক্কায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ উপজেলার অন্তত ২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

আকাশ থেকে দেখা ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় ‌’ফণী’র তাণ্ডবলীলা

রাত ১০টা ২০ মিনিটে আবহাওয়া অফিসের দেওয়া বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ভারতের উড়িষ্যা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও কিছুটা দুর্বল হয়ে ভারতের উপকূলীয় উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (২১.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৫০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আগামীকাল (৪ মে) সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।

বাংলাদেশ এবং এর উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার (৩ মে) সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে।

cyclone-after-before

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দ্বীপ ও চরসমূহ সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে । চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ছয় নম্বর বিপদ সংকেত বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।

এদিকে শুক্রবার ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল বলেছেন, ‘ফণী’র সতর্কতা জারির পর ১৯টি জেলায় জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিকেল পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত এ সংখ্যা ১৫ থেকে ১৮ লাখে পৌঁছানোর আশাবাদ আমাদের। আমাদের টার্গেট ২১ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা। তবে ঝড়ের গতি কমে গেলে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ কম আসবে। ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তারপরও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনে আরও আশ্রয়কেন্দ্র করা, সেটাও হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রাণহানির মতো কোনো দুঃসংবাদ পাওয়া যায়নি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!