ফণীর হুমকিতে ভারতের দশ লাখ মানুষ

ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ঘূর্ণিঝড় ফণীতে প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ভারত সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার সরকারের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ওড়িশার নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ৮৭৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সব মিলিয়ে ৮ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।

কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে। ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ ও পশ্চিম বঙ্গে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভারতীয় কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর জন্য জাহাজ ও হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে।

ওড়িশার বিশেষ রিলিফ কমিশনার বিষ্ণুপদ শেঠি রয়টার্সকে বলেছেন, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে সতর্ক করতে সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করছি আমরা।” মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের। জরুরি ত্রাণ সহায়তার জন্য অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী সোয়া ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় ভারতের পারাদ্বীপ ও বিশাখাপত্তম বন্দরের কর্মকাণ্ড বুধবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শতাধিক ট্রেন।

জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত পুরী থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে পর্যটকদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার উপকূলীয় এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

ভারতে জাতীয় নির্বাচনের এই মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় ফণী হাজির হওয়ায় ওড়িশা রাজ্যের ১১টি উপকূলীয় জেলা থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ফণীর প্রভাবে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। ওড়িশার উপকূলীয় অঞ্চলে কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ মিলিমিটার ছাড়াতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে।

দুই দশক আগে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে ওড়িশা উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছিল একটি সুপার সাইক্লোন। এরপর ২০১৩ সালেও বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল ভারতের এ রাজ্যে। তবে সেবার বিপুল সংখ্যক মানুষকে আগে থেকে সরিয়ে নেওয়ায় বহু প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!