ফটিকছড়ির গৃহবধূ মামনি বালা হত্যার নেপথ্যে শাশুড়ি

চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্তের পিতা শ্যমলকান্তির দাবি

চট্টগ্রামের ফাটিকছড়ি উপজেলা ভূজপুর থানার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের গৃহবধূ মামনি হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও তার পরিবারকে মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই দিতে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে দিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন হারুয়ালছড়ির বাসিন্দা শ্যামল কান্তির পরিবার।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান শ্যামল কান্তি দে।

প্রসংগত, ১৪ এপ্রিল রাত একটার দিকে ভূজপুর থানার হারুয়ালছড়ি গ্রামের প্রবাসী রূপন কান্তি দের স্ত্রী গৃহবধূ মামনি দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। এ সময় শ্বশুর মিলন কান্তি দে-কে পেটে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনার পর মিলন কান্তির পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্যামল কান্তি দের ছেলে তনয় দে ও প্রতিবেশী সানি দাশকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান করে। ভূজপুর থানা পুলিশ তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বর্তমানে তারা দুজন চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে রয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে শ্যামল কান্তি দে বলেন, ‘বউ শাশুড়ির বিরোধ থেকে শাশুড়ি রত্মা রানীর ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। অথচ এ ঘটনায় আমার নিরাপরাধ ছেলে ও প্রতিবেশী সানি দাশ আজ জেল খাটছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় প্রতিবেশী হিসেবে আমরাও ব্যাথিত ও শোকাহত। কিন্তু এলাকার একটি স্বার্থান্বেষী মহল পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার পরিবারেকে ঘায়েল করতে চায়। তারা পুরো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আড়াল করে প্রকৃত খুনিদের বাঁচাতে জন্য এমন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।’

শ্যামল কান্তি দে বলেন, ‘নিহত গৃহবধূ মামনির স্বামী দুবাই থাকেন। তাদের বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর আগে। বিয়ের পর স্বামী বিদেশে চলে যাওয়ার পর শাশুড়ি রত্মা রানী প্রায়ই মামনিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। মারধর করে কয়েকবার মামনিকে আহতও করেছিলেন। তিনি একবার কপালও ফাটিয়ে দিয়েছিলেন পুত্রবধূর। এ নিয়ে দুই পরিবার ও সমাজে শালিস বিচার হয়েছে অসংখ্যবার। প্রতিবেশী হিসেবে আমি নিজেও কয়েকবার শালিস বিচার করি। বরাবরেই নিহতের শাশুড়ি রত্মা রানী দোষী সাব্যস্ত হন। সামাজিক বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তার আক্রোশ ছিলো এবং একাধিকবার তিনি পুত্রবধূ মামনিকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন। রত্না রানীর ভাড়া করা সন্ত্রাসীরাই পুত্রবধূ মামনিকে হত্যা করে।’

পুলিশ রিমান্ডে নিয়েও হত্যাকাণ্ডে আমার সন্তান তনয় দে ও প্রতিবেশী সানি দাশের সংশ্লিষ্টতার কোন তথ্য পায়নি। কারণ আমার ছেলে এবং আমরা কেউ এই নৃশংসতার সাথে জড়িত নই।

সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনকে নয়টি তথ্যসূত্র দিয়ে শ্যামলকান্তি দাবি করেন, এসব তথ্য উদঘাটন করতে পারলে মামনি হত্যার প্রকৃত খুনি কারা তা জানা যাবে।

এ হত্যার তদন্তের ভার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে শ্যামল কান্তির পরিবারের সদস্যরা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য,মামলা তুলে নিতে জন্য হুমকী দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে ২৭ মে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত মামনি বালার স্বামী রুপন কান্তি দে। এ বিষয়ে থানা থেকেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন রুপন।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!