ফটিকছড়িতে ৫ ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থীর জয়, নৌকা জিতেছে সাতটিতে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে পাঁচ ইউনিয়নে জয়ী হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন সাতটি ইউনিয়নে।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ফটিকছড়ির ১৪ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ১৪টি ইউনিয়নে নারী-পুরুষ মিলে মোট ভোটারসংখ্যা দুই লাখ ৭৭ হাজার ১৫ জন। ১২৮টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় ভোটগ্রহণ।

ফটিকছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে পাঁচ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এরা হলেন— বাগানবাজার ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সাজু, নারায়ণহাট ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাফর মাহমুদ, হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী, পাইন্দং ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম সরোয়ার হোসেন স্বপন এবং জাফতনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়া উদ্দিন জিয়া।

ফটিকছড়িতে ৫ ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থীর জয়, নৌকা জিতেছে সাতটিতে 1

অন্যদিকে ফটিকছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন সাতটি ইউনিয়নে। এরা হলেন— দাতঁমারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জানে আলম, কাঞ্চননগর ইউনিয়নে কাজী মোহাম্মদ দিদারুল আলম, সুন্দরপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ চৌধুরী, রোসাংগীরি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সোয়েব আল সালেহীন, সমিতিরহাট ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ইমন, ধর্মপুর ইউনিয়নে কাজী মাহমুদুল হক।

এর আগে আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বর্তমান চেয়ারম্যান ওহিদুল আলম। অন্যদিকে হাইকোর্টে রিট আপিল থাকায় ফটিকছড়ির উপজেলার লেলাং ও বখতপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন ৬ সপ্তাহ স্থগিত রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের ভোটে ১৪ ইউপির মধ্যে ১২টি ইউপিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীসহ চেয়ারম্যান পদে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৪ জন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০৫ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪২১ জন প্রার্থী মাঠে লড়েন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৭ জন করে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১ নং বাগান বাজার এবং ১০ নং সুন্দরপুর ইউনিয়নে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-সংঘাতে সারাদিন আলোচনায় ছিল ফটিকছড়ি। নানা স্থানে সহিংসতা, কেন্দ্র দখলের চেষ্টা, বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ২ টার দিকে উপজেলার লেলাং ইউনিয়নে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে মোহাম্মদ শফি নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, দিনব্যাপী নির্বাচনী সংঘর্ষে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন ২০ জন ব্যক্তি— যাদের মধ্যে ১২ জনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল রেফার করা হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রার্থীরা তাদের ভোটারদের ভোট দিতে বাধা প্রাদান ও কেন্দ্র থেকে এজেন্ট তুলে দেওয়া, জাল ভোট প্রদান ও ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন।

নির্বাচন শেষে ভোট গণনাকালে সুন্দরপুরের স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদুল আজম বলেন, ‘নৌকার সমর্থকেরা আমার এজেন্টদের ভয় ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে জাল ভোট চালিয়েছে। এখন ফলাফল পাল্টে দিতে গণনায় কারচুপি করছেন।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!