ফটিকছড়িতে পাওয়া বিরল প্রজাতির বানর গেল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। বুধবার (১ এপ্রিল) উপজেলার ভূজপুর থানাধীন দাতমারা ইউনিয়নের হেঁয়াকো এলাকা থেকে বিলুপ্ত প্রজাতির বানরটি উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, ইউনিয়নের হেঁয়াকো এলাকার পূর্ব সোনাই গ্রামে হঠাৎ লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বানরটি। বিলুপ্ত প্রজাতির বানরটি চিনতে না পেরে কৌতূহল জাগে স্থানীয়দের মনে। পরে তারা কৌশলে বানরটিকে আটক করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফিন বানরটিকে উদ্ধার করে বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এরা ‘বেঙ্গল স্লো লরিস’ বা লজ্জাবতী বানর নামে পরিচিত। এ বানর দেখতে ছোট, নিশাচর ও চুপচাপ প্রজাতির একটি প্রাণী। তাদের এই লাজুক স্বভাবের কারণেই এদের নাম লজ্জাবতী বানর। আইইউসিএন এদের মহাবিপন্ন বানরের তালিকায় রেখেছে। লজ্জাবতী বানর অন্যান্য বানর প্রজাতিদের থেকে অনেক বেশি বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও এরা বিশ্বে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে।’

ফটিকছড়িতে পাওয়া বিরল প্রজাতির বানর গেল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় 1

বন্যপ্রাণী গবেষকদের মতে, বন ধ্বংস এবং বনে খাদ্যের অভাবের কারণে বন্যপ্রাণীরা মূলত লোকালয়ে চলে আসে। গহীন সবুজ বনের ভেতরে লম্বা গাছের মগডাল থেকে গাছের কচি পাতা, গাছের আটা, কষ, ছোট ছোট পোকামাকড়, ছোট পাখি ও এবং বিভিন্ন প্রাণীর ডিম এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। তবে অন্য বানরের মতো এরা হাত দিয়ে খায় না। পাখির মতো সরাসরি মুখ লাগিয়ে খায়। তারা খুব শান্ত স্বভাবের। অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চেয়ে তারা বেশ ধীরে চলে।

বিশেষ প্রয়োজন না হলে দিনে এরা চলাচল করে না। অন্য প্রজাতির বানরের চেয়ে এদের লেজও খুব ছোট। যা দূর থেকে তেমন একটা চোখে পড়ে না। এরা প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। লজ্জাবতী বানর বনাঞ্চল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পরাগায়নেও এদের ভূমিকা আছে। আমাদের দেশে গত দুই দশকে লজ্জাবতী বানরের সংখ্যা প্রায় ৫০ ভাগ কমে গেছে শুধুমাত্র আবাসস্থল ধ্বংস ও শিকারের কারণে। আন্তর্জাতিক চোরাই বাজারে লজ্জাবতী বানরের অনেক চাহিদা রয়েছে। এই কারণে সারা বিশ্বেই এরা হুমকির মধ্যে পড়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!