প্রেমিক ‘আঙ্কেলের’ হাতেই খুন সুপ্তি, দুই জোড়া দম্পতির গোপন পরকীয়ার পরিণতি

চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং এলাকায় ‘আঙ্কেল’ জাকির হোসেনের হাতেই খুন হয়েছিলেন গৃহবধূ সুপ্তি মল্লিক। দুই জোড়া দম্পতি জড়িয়ে পড়েছিলেন পরকীয়ায়। এর জের ধরেই ঘটেছে খুনের ঘটনা।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিমের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শনিবার (১৬ জানুয়ারি) আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জাকির হোসেন নিজেই একথা স্বীকার করেছেন।

আদালত দেওয়া জবানবন্দিতে জাকির জানান, কাপ্তাইয়ে বসবাসের সুবাদে ২০১৪ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার বাহার উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেনের সঙ্গে সুপ্তির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে ২০১৮ সালে তারা পালিয়ে গিয়ে গোপনে বিয়ে করেন। মাসতিনেক সংসার করার পর জাকিরকে তালাক দিয়ে ঘরে ফিরে যান সুপ্তি।

সুপ্তি মল্লিক কাপ্তাই এলাকার সাধন কুমার মল্লিকের মেয়ে। সাধন কর্ণফুলী পেপার মিলের চাকরি থেকে ছয় বছর আগে অবসর নেন।

এদিকে ২০২০ সালের ১৪ আগস্ট সুপ্তি মল্লিকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়ে বাসু দেবের। সুপ্তির পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিয়ের পর বাসু দেবের সঙ্গে তার ভাইয়ের শ্যালিকার অনৈতিক সম্পর্ক ধরা পড়ে সুপ্তির কাছে। বাসু দেব একটি ফার্মেসিতে এবং তার ভাই সেলুনে কাজ করতেন। তাদের বাড়ি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়িতে।

এদিকে দুই পক্ষের দেওয়া তথ্যে মামলার তদন্ত সম্পৃক্তদের কাছে উঠে আসে, স্বামী তার ভাইয়ের শ্যালিকার সঙ্গে আর সুপ্তি সম্পর্ক চালিয়ে যায় তার সাবেক স্বামীর সঙ্গে।

গত বছরের ৪ নভেম্বর দুপুরে জাকির চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং এলাকার নাছিমা মঞ্জিলে সুপ্তির বাসায় আসেন। প্রতিবেশীদের কাছে সুপ্তি জাকিরকে তার ‘আঙ্কেল’ বলে পরিচয় করিয়ে দেন। ওইদিনই বিকেল ৫টায় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ সুপ্তির লাশ উদ্ধার করে।

এরপর জাকিরকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পিবিআই। পরে তিনি আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এছাড়া ওই ঘটনায় সুপ্তির স্বামী বাসু দেব ও ভাসুর অনুপম চৌধুরীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ৪ নভেম্বর থেকে তারা এখনও কারাগারেই আছেন।

শনিবার পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘সুপ্তি মল্লিক খুন হওয়ার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি আমরাও ছায়া তদন্ত শুরু করি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা জাকিরকে খুনি হিসেবে শনাক্ত করার পর তাকে গ্রেপ্তার করি। খুনের বিবরণ দিয়ে জাকির মহানগর হাকিম শফিউদ্দিনের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!