প্রাথমিকে ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত পাঠ পরিকল্পনা, সম্ভব না হলে ‘অটো প্রমোশন’

মহামারী করোনাভাইরাসের থাবায় চলতি শিক্ষা বছরের প্রায় পুরোটা শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই কাটিয়েছে। বিশেষ করে, গত ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দফায় দফায় বাড়িয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এই ছুটি পুরো অক্টোবর পর্যন্ত বাড়তে পারে সম্ভাবনা মাথায় রেখে ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত পাঠ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।

আগামী ১ নভেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর টার্গেট করে ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত পাঠ পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (ন্যাপ) এই পাঠ পরিকল্পনা প্রকাশ করে। এতে দেখা গেছে, স্কুল খোলা সম্ভব হলে ১ নভেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বরের পর্যন্ত চলবে পঞ্চম শ্রেণির কার্যক্রম। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংক্ষিপ্ত এই পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না গেলে শ্রেণি মূল্যায়নেরও সুযোগ থাকবে না। ফলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অটো পাস দিতে হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য শ্রেণিতেও দেওয়া হবে অটো প্রমোশন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আমরা অক্টোবর ও নভেম্বরকে টার্গেট করে দুটি লেসন প্ল্যান তৈরি করেছি। যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়, তাহলে আমরা অক্টোবরের লেসন প্ল্যান নিয়ে কাজ করবো। সেক্ষেত্রে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা ৭৬ দিন সময় পাবো। অক্টোবরে খোলা না গেলে নভেম্বরে আমরা একটি লেসন প্ল্যান অনুমোদন করে রেখেছি। এক্ষেত্রে ১৯ ডিসেম্বরের ৪০ দিন সময় পাবো ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করানোর জন্য। সেটি যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে আমরা মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে পারবো। আর যদি স্কুল খোলা না যায় (নভেম্বরে) তাহলে প্রধানমন্ত্রী যেটি বলেছেন, আমাদের অটো পাস ছাড়া উপায় নেই। ’

নভেম্বরকে টার্গেট করে তৈরি সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে ১৯ ডিসেস্বর পর্যন্ত পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। এই পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে মূল্যায়নের সময় থাকলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান মূল্যায়ন করবে।

আর নভেম্বরের শুরুতে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডিসেম্বরে খোলার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিদ্যালয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫ দিন সময় লাগবে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে। সেই হিসেবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রমের জন্য সময় থাকে মাত্র চার দিন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সব বিষয় মাথায় রেখে গত ১৮ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার প্রস্তাবনা পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর গত ২৫ আগস্ট মন্ত্রণালয়ে ফাইল পৌঁছে। ওইদিনই মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, পিইসি ও সমমান পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হবে না। স্ব-স্ব বিদ্যালয় নিজেরা নিজেদের মতো করে পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!