প্রশাসনিক কর্মকর্তার সহকারীদের পদোন্নতি দেওয়া হোক

বিভাগীয় কমিশনার অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত অফিস সহকারীদের পদবি ও বেতন গ্রেডের কোন পরিবর্তন না হওয়ায় বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস), ঢাকা কর্তৃক গত ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়াম, ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সম্মেলনে ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচিসহ কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা করেছেন। ফলে প্রশাসনে কাজের যেমন বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রশাসনে সেবা পেতে আসা লোকজন।

নুরুল মুহাম্মদ কাদের
নুরুল মুহাম্মদ কাদের
বৃটিশ শাসিত ভারতবর্ষ ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলাকে ২৩টি জেলায় ভাগ করে প্রথম ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর পদ সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে ১৮২১ তাঁকে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা অর্পণ করা হয়, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট নামে আরেকটি পদ দেয়া হয়। এটি জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট। জেলার উন্নয়ন কর্মসমূহের সমন্বয় সাধনের জন্য পাকিস্তান আমলে District Magistrate বা Collector এর জন্য আরেকটি পদ সৃষ্টি করা হয়। যার নাম ডেপুটি কমিশনার। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ হলে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এ পরিবর্তন সাধন করা হয়। বিচারিক কাজের জন্য জেলা পর্যায়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল দায়িত্ব পূর্বের ন্যায় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের হাতেই অর্পিত রয়েছে এবং জেলার জনগণ এখনও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাদের সুখ দুঃখের এবং আইনি সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ের জেএম শাখায় এ বিষয়ে জনগণকে সেবা দিয়ে থাকেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। Magistrate শব্দটি ল্যাটিন Magistratus শব্দ থেকে এসেছে যার মানে Administrator বা শাসক। ভারতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বাংলায় বলা হয় ‘জেলা শাসক’। ‘শাসক’ শব্দটি সহনীয় করে বাংলাদেশে ‘প্রশাসক’ শব্দটি গ্রহণ করা হয়েছে। ‘জেলা প্রশাসক’ বহুল ব্যবহৃত District Magistrate শব্দের পরিবর্তিত বাংলারূপ যা এখনও ভারতে জেলা শাসক নামে অভিহিত করা হয়। জেলা প্রশাসক জেলার প্রধান প্রশাসনিক ও রাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি একাধারে জেলা প্রশাসক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা কালেক্টর ও ডেপুটি কমিশনার। ফলে তিনি একইসাথে আইনশৃঙ্খলা, ভূমিপ্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় এবং সাধারণ ও স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। জেলা প্রশাসক জেলাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান মতে, বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার হওয়ায় জেলা প্রশাসকগণ জেলাতে জাতীয় সরকারের প্রতিনিধি। তিনি ওই জেলার সবকিছুর জন্য জাতীয় সরকারের নিকট জবাবদিহি করেন। তিনি সরাসরি সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে যোগাযোগকারী ক্ষমতাপ্রাপ্ত জেলার একমাত্র কর্মকর্তা। ডিউটিজ অব চার্টার অনুযায়ী জেলা প্রশাসক জেলার বিভিন্ন দপ্তর সম্পর্কিত ১২০টি কমিটির সভাপতি। এসব কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। জেলা প্রশাসক জাতীয় সরকারের যাবতীয় কাজ জেলা পর্যায়ে করে থাকেন। জেলায় অবস্থিত প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অফিস জেলা প্রশাসনের অংশ এবং জেলা প্রশাসকের সাধারণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। জেলা পর্যায়ে এনজিও বিষয়ে সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকেন। আইনশৃংখলা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্যবসা বাণিজ্য, চিকিৎসা, বিনোদন, শিক্ষা, বিজ্ঞান, কর্মসংস্থান, নারী ও শিশু, ধর্ম, পাঠাগার, দুর্যোগ ও ত্রাণ, কৃষি, প্রাণি, সার ও বীজ ইত্যাদি বিষয়ে সমন্বিত কাজ করেন। স্থানীয় পর্যায়ের সার্বিক অবস্থা সরকারকে অবহিত করেন, সমস্যার সমাধান প্রদান করেন। এই সকল সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সাধারণভাবে সকল দপ্তরের জন্য আবশ্যিক কর্তব্য। তিনি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সরকারের নজরে আনেন, জেলার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে প্রতি ১৫ দিন অন্তর পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন সরকারের নিকট প্রেরণ করেন। তার সুপারিশে সরকার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে।

জেলা প্রশাসনের ব্যাপক এ বিশাল কর্মযজ্ঞের সিংহভাগ কাজ করেন এ অফিসের সহকারীরা। অফিস কর্মপ্রণয়ন অনুযায়ী বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনেপ্রাপ্ত পত্রসমুহ অফিস সহকারীর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। পত্রের প্রেক্ষিতে কর্মকতার নির্দেশে তথ্য তত্ত্ব ও উপাত্ত তৈরির মাধ্যমে মতামতসহ নোট উপস্থাপন করেন অফিস সহকারীরা। জেলা প্রশাসনে কর্মী নিয়োগ দেয়ার পর তাকে ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে বুদ্ধিমত্তা, মেধা, দক্ষতা ও বেশি শ্রম দিয়ে কাজ করতে হয়। জেলা প্রশাসনে বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে গিয়ে কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে জ্ঞানের পরিধিও বাড়াতে হয়। এজন্য সহকারীদের বিধি-বিধান নিয়ে প্রতিনিয়ত পড়তে হয়। যেহেতু অফিসের কাজে দক্ষতার ওপরই প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতি ও ভাবমূর্তি নির্ভর করে তাই প্রশাসনে কর্মরত সকল কর্মচারীকে নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং গতি দিয়ে কাজ করেন।

একথা সত্যি যে, সরকারের অন্যান্য দপ্তরের তুলনায় কাজের পরিধি, নোট উপস্থাপন, পত্র প্রস্তুতের ক্ষেত্রে ভাষার উৎকর্ষতা ও বানান নির্ভুলতা, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত সহকারীর পারদর্শীতার সাথে সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অধীন, বিভিন্ন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, কর্পোরেশন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কাজের মান গড়পরতা হিসাবে মূল্যায়ন করা সমীচীন নয়। প্রশাসনে সহকারীরা যাদের সাথে কাজ করে থাকেন তারা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ কেবিনেট সচিব হলেও অফিস সহকারীরা ১৬ নম্বর গ্রেডে নিয়োগ পেয়ে ২৫-৩০ বছর চাকরি করার পর উচ্চমান সহকারী পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। মূলত এটি পদোন্নতি নয়, কারণ এ পদোন্নতিতে আর্থিক কোনও লাভ নেই। ফলে এসব পদোন্নতিতে তাদের আগ্রহ থাকে না। তাছাড়া সরকারের উচ্চপদের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য আনুপাতিক হারে পদ খালি থাকে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের জন্য এরূপ পদ খালি না থাকায় পদোন্নতিও হয় না। প্রত্যেক কালেক্টরেটের কমপক্ষে ১০০-১৫০ জন সহকারীর সাকুল্যে ১০-১৫ কমবেশি উচ্চমান সহকারী পদ আছে। ফলে এ পদে চাকরিতে জীবন শেষেও কোনও পদোন্নতি না পেয়ে একই পদ থেকেই অবসরে যাচ্ছেন। তাছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাজসমুহ প্রশাসনিক, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটভিত্তিক হওয়ায় বর্তমানে নিম্নমান সহকারী, সাঁটলিপিকার, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক, মুদ্রাক্ষরিক কাম অফিস সহকারী, এসব পদের কোন কাজও নেই। মূলত অফিস সহকারীগণের কাজ প্রশাসনিক।

তাছাড়া কাজের সাথে এসব পদের নামকরণেরও সার্থকতা নেই। যেমন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে কর্মরত অফিস সহকারীগণ বেঞ্চ সহকারীর দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অথচ কোথাও কোথাও এই কাজটি করেন ১ম শ্রেণির পদধারী একজন বেঞ্চ অফিসার। তাছাড়া নিম্নমান সহকারী শব্দের নিম্ন শব্দটি দ্বারা হীন, নিকৃষ্ট, ইতর, নিচু অর্থে ব্যবহৃত হয়। নিম্নমান সহকারী মানে নিকৃষ্ট সহকারী বুঝালেও এ পদের কাজ নিকৃষ্ট তা নয়। তবু পদটি আছে। আবার জেলা প্রশাসনে চেইনম্যান (শিকলবাহক) নামে একটি পদ আছে। তাই ইউএনও, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারীরা বিদ্যমান গ্রেড ও পদমর্যাদা উন্নীতকরণ এবং পদনাম পরিবর্তন করার জন্য আন্দোলন করে আসছে।

জেলা প্রশাসন ঐতিহ্যবাহী এবং জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় দক্ষ জনবলের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। বর্তমান ডিজিটাল অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য যুগোপযোগী জনবল সৃষ্টিসহ মেধাবীদের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিয়োগ বিধিমালায় নন ক্যাডার পদসমূহে পদোন্নতির সুযোগ থাকা জরুরি। বিভিন্ন পদবির পরিবর্তে চাকরিতে প্রবেশের একটি মাত্র এন্ট্রি পদ থাকা বাঞ্ছনীয়। সরাসরি নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরিবর্তে স্নাতক বা সমমান ডিগ্রিকরণসহ এ পদটি ১৪ নম্বর গ্রেডভুক্ত করা আবশ্যক। ‘সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ হতে ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদে পদোন্নতির মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের জনবল ব্যবস্থাপনা যুগোপযোগী ও গতিশীল হবে। জনগণের প্রত্যাশিত সেবা প্রদানে গতিশীলতা আসবে।

বর্তমানে নিয়োগের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বিধিমালা ছাড়াও রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অফিস স্মারক-পরিপত্র। এসব পদের নাম ও বেতন স্কেল একই হলেও কোনও কোনও ক্ষেত্রে নিয়োগ পদ্ধতি ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিন্নতা রয়েছে। রয়েছে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম। সচিবালয়ের একজন কর্মচারী ১৬ গ্রেডে চাকরিতে যোগদান করে ৫ বছর পর ১০ গ্রেডে পদোন্নতি পেয়ে যান। আর সচিবালয়, হাইকোর্ট, সংসদ, নির্বাচন কমিশন, পিএসসি ও মন্ত্রণালয়ের সংযুক্ত বিভাগসমূহে ১৬তম গ্রেডে যোগদান করে অনেকে সহকারী সচিব হয়ে চাকরি থেকে অবসর নিচ্ছেন। ইসিতে তৃতীয় শ্রেণি হতে একলাফে প্রথম শ্রেণি কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি প্রদানেরও নজির আছে। রাজউকে ইউডি পদে আট বছর চাকরি করলে অফিস সুপার পদে পদোন্নতি পাওয়া যায়। তাছাড়া বাংলাদেশ সচিবালয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, খাদ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার বিভাগ, হিসাব রক্ষণ অফিস, সিএমএম কোর্ট, কৃষি বিভাগ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, সংসদ সচিবালয় অফিস সমুহে সমপদের বিভিন্ন পদের পদবি ও গ্রেড পরিবর্তন করা হয়। শুধুমাত্র ইউএনও, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারীরা চাকরিতে জীবন শেষেও কোনও পদোন্নতি না পেয়ে একই পদ থেকেই অবসরে যাচ্ছেন।

গত ২০১৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এক পরিপত্রে এমএলএসএস এবং দপ্তরি উভয় পদকে ‘অফিস সহায়ক’ পদে পরিবর্তন করা হয়। অফিস সহায়ক আর অফিস সহকারী পদবি সমার্থক শব্দ হলেও তাদের কাজের ভিন্নতা রয়েছে। এমএলএসএস পদের অর্থ সবার মনে রাখা সম্ভব নয় বলেই হয়তো অফিস সহায়ক নামটি মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছে। কিন্তু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদবিরা কম্পিউটার অপারেট করে। কম্পিউটারের উপর দক্ষতা না থাকলে অপারেট করা সম্ভব নয়। নামকরণ আলাদা তাৎপর্য বহন করে।

ক্যাভেন্ডিস বলেছেন, ‘একটি সুন্দর নাম ধন-সম্পদের চেয়েও উত্তম।পরিশেষে বলা যেতে পারে, কোনও বিষয় বা বস্তুর নামকরণ জোর করে চাপিয়ে দেবার বিষয় নয়।’ কাজের সাথে চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় কমিশনার অফিস, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত অফিস সহাকরী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক/সমমান পদের নাম ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ ও উপ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদবি নামকরণ করা হোক।

লেখক: সাহিত্য সম্পাদক, কেসিদে ইনিস্টিটিউট অফিসার্স ক্লাব, চট্টগ্রাম।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!