প্রবাসী স্বামী চট্টগ্রামে ফিরে বউ-ছেলেকে খুঁজছেন হন্যে হয়ে, টাকা-সোনাদানা সবই হাওয়া

চট্টগ্রামের পটিয়ায় প্রবাসফেরত স্বামীর সুখের সংসার ভেঙে সর্বস্ব লুটে নিয়ে সন্তানসহ পালিয়েছে স্ত্রী। পাগলের মতো হন্য হয়ে বউ-ছেলের খুঁজে পথে পথে কাঁদছেন স্বামী মো. সেলিম উদ্দিন।

পালিয়ে যাওয়া গৃহবধূ জুলি আক্তার সৌদিফেরত মো. সেলিম উদ্দিনের স্ত্রী। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই কন্যা ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বই কেনার কথা বলে ছোট ছেলে এখলাছ উদ্দিন সোহানকে (৬) নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান জুলি আক্তার।

পালানোর সময় জুলি আক্তার হেফাজতে থাকা স্বামীর পাঠানো নগদ ৩ লাখ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণ, ব্যাংক একাউন্টে থাকা নগদ ১ লাখ ৯ হাজার টাকাসহ দামি আরও নানান পণ্যসামগ্রীসহ ছয় বছরের ছেলে সন্তানকে নিয়ে চলে যান। এছাড়া তার নামে রয়েছে ৪ লাখ টাকার এফডিআরও।

ওইদিন সকাল ১২টায়ও স্ত্রী বাড়িতে না ফিরলে আত্মীয়স্বজন ও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয়। খোঁজ না পেয়ে পটিয়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় (জিডি নম্বর ৩১০)।

জিডিতে প্রবাসী সেলিম উদ্দিন উল্লেখ করেন, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় আমার স্ত্রী জুলি আক্তার (৩৩) আমার ছেলে এখলাছ উদ্দিন সোহান (৬) নিয়ে পটিয়া থানার মোড় এলাকায় বই ক্রয়ের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন। এখনও ঘরে ফিরে আসে নি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিলে মোবাইল সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সম্ভাব্য স্থানসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও স্ত্রী এবং সন্তানের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বর্তমানেও খোঁজাখুঁজি অব্যাহত আছে।

এছাড়া গত (৭ ফেব্রুয়ারি) স্ত্রী-সন্তানের খুঁজে পেতে র‍্যাব-৭ এর কাছে নিখোঁজ ডায়েরির আবেদন করেন প্রবাসফেরত মো. সেলিম উদ্দিন।

মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার সংসার তছনছ হয়ে গেছে। আমার সর্বস্ব লুট করে স্ত্রী আমার ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কাঁদতে কাঁদতে প্রবাসফেরত মো.সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর আমি সৌদিতে ছিলাম। স্ত্রী ও ছেলে সন্তানদের সুখে কথা চিন্তা করে তাদের জন্য কষ্ট করেছি। গত দুই মাস ১৮ দিন আগে সৌদি আরব থেকে একেবারে দেশে চলে আসি। আসার পর সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ কি হয়ে গেলো বুঝতে পারছি না। ১৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রতি বছর দেশে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলাম। কয়েক মাস থেকে আবার চলে যেতাম।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই কন্যা ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তারমধ্যে বড় মেয়ে নবম শ্রেণিতে আর ছোট মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আর ছোট ছেলেকে এই বছর নার্সারিতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলাম। তাদের নিয়ে খুব সুখের সংসার চলছিল। হঠাৎ সুখের সংসারটা তছনছ হয়ে গেল। আমার দুই মেয়ে তাদের মা ও ভাইয়ের জন্য কাঁদতে কাঁদতে পাগল হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রী ও ছেলেকে ফিরে পেতে চাই। আমি আগের মতো তাদের নিয়ে সুখের সংসার করতে চাই।’

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ‘প্রবাসীর স্ত্রী ও ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে স্বামী মো.সেলিম উদ্দিন নিখোঁজ ডায়েরি করেছে। আমরা তাদের সর্বশেষ লোকেশন পেয়েছিলাম নগরের মধ্যে। এরপর তাদের লোকেশন আর শনাক্ত করা যায়নি। আমরা তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

এএইচ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!