প্রবাসীরা যেভাবে করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করবেন ধাপে ধাপে

টিকার নিবন্ধনে প্রবাসীদের ভোগান্তি কাটছেই না

করোনার টিকার জন্য প্রথম ধাপে চট্টগ্রামের জনশক্তি অফিস বিএমইটিতে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে প্রবাসীদের ভোগান্তি কাটছেই না। বিএমইটির সার্ভার ডাউন থাকায় প্রথম দিন চট্টগ্রামের কারোরই রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হয়নি। সেদিন শুধুই প্রবাসীদের তথ্য নিয়ে অ্যাপের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে বলে ফেরত পাঠানো হয়। দ্বিতীয় দিনে তথ্য জমা নেওয়ার পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ব্যাংকে টাকা জমার বদলে নগদ টাকা নিয়ে একটা রশিদ দেওয়া হয় তাদের।

বিদেশগামী প্রবাসীদেরও করোনার টিকার নিবন্ধন করতে হবে সুরক্ষা অ্যাপে। আর সুরক্ষা অ্যাপে প্রবাসীদের শনাক্ত করতে ব্যবহার হবে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডাটাবেস। ফলে প্রবাসী হিসেবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে করোনার টিকা পাওয়ার প্রথম ধাপই হচ্ছে বিএমইটিতে রেজিস্ট্রেশন করা।

সারাদেশের মত চট্টগ্রামেও ৩ থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত নগরীর আগ্রাবাদে বিএমইটি কার্যালয়ে ধাপে ধাপে এই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম পরিচালনার সূচি নির্ধারণ করেছে বিএমইটি।

জানা গেছে, বিএমইটির এই রেজিস্ট্রেশনের জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২০০ টাকা ফি জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। আর এই ফি জমা দিতে ব্যবহার করতে হয় ‘আমি প্রবাসী’ নামে অন্য একটি মোবাইল অ্যাপ।

কিন্তু বিএমইটির সার্ভার ডাউন থাকায় প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে প্রবাসীদের। দ্বিতীয় দিনে অবশ্য তথ্য জমা নেওয়ার পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ব্যাংকে টাকা জমার বদলে নগদ টাকা নিয়ে একটা রশিদ দেওয়া হয় তাদের।

এই পুরো প্রক্রিয়ায় বিষয়ে বিএমইটির দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও সরাসরি সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি হননি কেউই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সার্ভারের সমস্যার কারণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা রশিদ দিয়ে ফি-এর টাকা জমা নিচ্ছি। এগুলো অফিস থেকে জমা করে দেওয়া হবে।’

বিএমইটির ডাটাবেইজে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা আগে প্রবাসে গেছেন তারা ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপটা ব্যবহার করে ঘরে বসেই এই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সমস্যাটা হচ্ছে সার্ভারের। সার্ভার ঠিক হয়ে গেলে তাদের রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না। এক্ষেত্রে নতুন যারা প্রথমবার বিদেশ যাবে তাদেরকে সশরীরে এসেই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আর পুরানোদের মধ্যে যারা ২০২১ সালের ১ জানুয়ারির পর রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না।’

তিনি বলেন, ‘কেউ চাইলে সশরীরে এসেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। আমাদের অফিসের দেওয়া সিডিউল অনুযায়ী। তবে মহামারীর মধ্যে ঝুঁকির পাশাপাশি লকডাউনের মধ্যে যাতায়াত ভোগান্তির যে জটিল প্রক্রিয়া। এজন্য আমার পরামর্শ হলো প্রথমে আমি প্রবাসী অ্যাপ ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করা উচিত। কেউ যদি সেটা করতে ব্যর্থ হয় তাহলেই বিএমইটি কার্যালয়ে সরাসরি যোগাযোগ করলে তার রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে।’

‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেইজে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে অ্যাপটিতে দেওয়া জরুরি যোগাযোগ নম্বরে ফোন করা হয় চট্টগ্রাম প্রতিদিনের পক্ষ থেকে। শুধুমাত্র অ্যাপটি ব্যবহার করে বিএমইটি ডাটাবেইজে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে কিনা— এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা জানান, ‘অ্যাপে প্রবেশের পর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু নামে একটি অপশন আছে। সেখানে সকল তথ্য দেওয়ার পর যদি উনার ফি জমা সম্পন্ন হয় তাহলে উনার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ধরে নিতে হবে।’

আমি প্রবাসী অ্যাপ ব্যবহার করে যেভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন
প্রথমে ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে প্রবেশের পর একটা নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন শুরু করতে হবে। যে নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন সে নম্বরে বিকাশ/নগদ/রকেট যেকোন একটি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থাকতে হবে। নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের পর ধাপে ধাপে আবেদন কারীর পাসপোর্ট, ভিসা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের (যদি থাকে) স্ক্যানিং কপিও জমা দিতে হবে। সাথে একজন নমিনীর পরিচয়পত্রও দিতে হবে।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!