প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়ে মেয়ের বিয়ে ভন্ডুলের ক্ষোভ ওড়ালেন যুবদল নেতা

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক ক্যাটাগরির সদস্য মো. একরাম মিয়ার আবদার বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বসাবেন মেয়ের বিয়ের আসর। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এতে সম্মতি দেননি। তবুও জোর করেই স্কুলে বিয়ের আয়োজন করেন তিনি। কিন্তু জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভন্ডুল করে দেয় এই আসর। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন একরাম মিয়া। ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানের ক্ষোভ প্রধান শিক্ষকের উপর উড়াতে নিয়ে আসেন এক যুবদল নেতাকে। দলবল নিয়ে আসা ওই যুবদল নেতা চড়াও হন প্রধান শিক্ষকের উপর। প্রাণনাশের হুমকিও দেন তাকে।

৩০ জুন (বুধবার) দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং মডেল থানার মনছুরাবাদের খান সাহেব আব্দুল হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষকের কক্ষেই তাকে হুমকি দেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি মিয়া মো. হারুন খান।

এ ঘটনায় শনিবার (৪ জুলাই) মামলা দায়ের করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। মামলা দায়ের পর পর পুলিশ ওই যুবদল নেতাকে গ্রেফতার করেছে।

মামলার অন্য আসামীরা হলেন ডবলমুরিং থানার মনছুরাবাদ মিয়া বাড়ীর মিয়া মো. হারুন খান, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক ক্যাটাগরির সদস্য মো. একরাম মিয়া, জানে আলম, মো. মাসুদ, মোঃ প্রিন্স, মো. আল নাহিয়ান।

মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, গত ৩০ জুন পাঁচলাইশ-ডবলমুরিং থানা শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল আলমের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল আসে স্কুলে। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ আরও কয়েকজন শিক্ষকও আসেন। তাদের আসতে দেখেই জোরপূর্বক স্কুলে ঢুকেন একরাম মিয়ার ভাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি মিয়া মো. হারুন খান ও তার আরেক ভাই জানে আলম, মো, মাসুদ, মো. প্রিন্স এবং মো. আল নাহিয়ান। প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকেই তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে টেবিলে থাপ্পড় মেরে ‘তাকে তুলে নেওয়ার’ হুমকি দেন তারা। এ সময় তাকে স্কুলের সভাপতি কর্নেল ‘বাঁচাতে পারবে না’ উল্লেখ করে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘একরাম মিয়া স্কুলে তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি চান। কিন্তু করোনার জন্য বন্ধ থাকা স্কুলে বিয়ের অনুমতি দেননি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। তবুও অনুমতি ছাড়াই গত ২৫ জুন স্কুলে বিয়ের আয়োজন করেন একরাম। কিন্তু সে বিয়ে বন্ধ করে দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। স্কুলে মেয়ের বিয়ে হতে না দেওয়ায় শিক্ষকদের স্কুলে আসতে মানা করেন এবং বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি দেন আসামীরা। শনিবার রাতে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয় হলে। রাতেই এ মামলার আসামী চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি মিয়া মো. হারুন খানকে গ্রেফতার করা হয়।’

আরএ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!