প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে দেশের প্রথম আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের যাত্রা শুরু

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের বিকাশ এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির প্রসারের লক্ষ্যে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্যবসায়িক ইনকিউবেটর ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ উদ্বোধন করেছেন।

বুধবার (৬ জুলাই) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) স্থাপিত এ ইনকিউবেটরের উদ্বোধন করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, ইউরোপ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; তার প্রভাবে তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, সারের দাম বেড়ে যাচ্ছে, খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে, জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাচ্ছে। সে প্রভাব সারাবিশ্বের উপর পড়েছে, বাংলাদেশের উপরও পড়েছে। সেগুলো মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। করোনা ও যুদ্ধ না হলে আমরা হয়ত আরো এগিয়ে যেতে পারতাম বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।’

এতে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রান্তে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

চুয়েট প্রান্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চুয়েট ভিসি, চুয়েট আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্প পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এক নজরে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর
চুয়েট

শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রায় ৫ একর (৪ দশমিক ৭ একর) জমির ওপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে রয়েছে- স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, এক্সিবিশন/প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি।

উদ্যোক্তা ও গবেষকদের কাজের সুবিধার্থে একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (অও) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/মিডিয়া কাভারেজ জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধা প্রভৃতি।

অন্যদিকে, মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক ৮টি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪ তলাবিশিষ্ট পৃথক দুটি (একটি নারী ও একটি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়া দুটি মিনি সুপার কম্পিউটার সম্বলিত অত্যাধুনিক গবেষণা ল্যাব শিগগিরই স্থাপিত হতে যাচ্ছে চুয়েটে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উদ্যোক্তা তৈরি এবং জ্ঞানভিত্তিক কোম্পানি গড়ে তুলতে বিশ্বের স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বিজনেস ইনকিউবেটর থাকলেও বাংলাদেশে তা এবারই প্রথম। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আইডিয়াগুলো বাস্তবায়ন এবং একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ-অবকাঠামো সহায়তা দেওয়া হবে। এ ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রি এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে একটা সেতুবন্ধ তৈরি হবে।

চুয়েটের এ উদ্যোগটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ ধরনের বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!