প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা তথ্য দিলেন রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি!

ভিডিও কনফারেন্স

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) অবস্থা জানতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পার্বত্য এলাকায় উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চশিক্ষার বিস্তারের জন্য রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কী খবর? কেউ কী ওখানে আছে?’

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান বাঁধ সংলগ্ন খালি জায়গায় সাড়ে ১৮ একর জায়গার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধনকালে তিনি একথা জানতে চান।

জবাবে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু সমস্যা ছিল, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগী নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখনো কিছু স্থাপনার কাজ বাকী আছে। অস্থায়ী স্থাপনার কাজ এই মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে শেষ করতে পারব। তখন আমরা নিজস্ব জায়গাতে আমাদের শ্রেণি কার্যক্রম চালাতে পারব।’

ড. প্রদানেন্দু বলেন, ‘আপনি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন। তখন জিনিসপত্রের যে দাম ধরা হয়েছিল, তা বর্তমান নির্মাণসামগ্রীর দামের বৃদ্ধির পেয়েছে। তখন ভূমির জন্য বরাদ্দ ছিল ২৬ কোটি টাকা আর আমরা ভূরি অধিগ্রহণ মূল্য বাবদ পরিশোধ করেছি ৬৫ কোটি টাকা। যাদের কাছ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন নতুন করে ডিপিপি সংশোধন করতে হবে একনেকের মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠাবো।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগে পার্বত্য অঞ্চলের আগে অধিগ্রহণকৃত ভূমি দাম কম ছিল। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ যে বঞ্চিত না হয় সেজন্য আমি ভূমি আইনটা সংশোধন করে সমতলের ন্যায় পার্বত্য এলাকাতেও তিনগুণ অর্থ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ডিপিপি সংশোধন করতে দ্রুত মন্ত্রণালয়ে পাঠান, আমি একনেকে অনুমোদন করে দিব। টাকা বাড়লে টাকা দিব, কিন্তু আমার বিশ্ববিদ্যালয়টি ভালো চলুক। অবশ্যই এ বিশ্ববিদ্যালয়টি করার সময় খেয়াল রাখবেন, যেন পার্বত্য অঞ্চলের মতো দৃষ্টিনন্দন ও সুন্দর হয়। শুধু বড় বড় দালান বানাবেন না। সুন্দরভাবে ডিজাইন করতে হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) রাঙামাটির ঝগড়াবিলের নিজস্ব জমিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধীর গতিতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. প্রদানিন্দু বিকাশ চাকমা ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, এই মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে অস্থায়ী ক্যাস্পাসে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে পারবে এবং মাত্র কয়েকটি ভবনের কাজ বাকী আছে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

ভিসি প্রধানমন্ত্রীকে ৩০ তারিখের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার কথা বললেও শুধুমাত্র একটি ভবনের কিছুটা কাজ দৃশ্যমান
ভিসি প্রধানমন্ত্রীকে ৩০ তারিখের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার কথা বললেও শুধুমাত্র একটি ভবনের কিছুটা কাজ দৃশ্যমান

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প প্রকৌশলী আকরাম হোসেন জানিয়েছেন, ‘সবচেয়ে এগিয়ে থাকা ২নম্বর শ্রেণি কার্যক্রম ভবনের কাজ এ মাসে শেষ করতে পারলেও বাকী যে ভবন আছে তা আগামী মাসের শেষ দিকে বুঝিয়ে দিতে পারবো বলে আশা করছি।’

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠা হওয়ার চার বছর চললেও এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সাল থেকে শহরের শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে চার ব্যাচের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এদিকে নিজেদের ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় হতাশ শিক্ষার্থীরা। গত বছর ৪ নভেম্বর মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মান্নান রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অধিগ্রহণকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পর নির্ধারিত জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ ভূমিতে নামফলক উন্মোচন করা হয়।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!