প্রকাশ্যে পিটিয়ে স্বামীকে হত্যা করলো স্ত্রী, নির্যাতনে অংশ নেয় শ্বশুর—শাশুড়িও

মৃত্যুর কাছে হার মানলেন কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও মাইজ পাড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার প্রবাসী মঞ্জুর আলম (৪৫)। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়ার পথে শনিবার (২২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান মঞ্জুর আলম।

মঞ্জুর আলম ঈদগাঁও কালিরছড়া এলাকার মৃত আব্দুল গণির পুত্র। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল হালিম। তিনি জানান, এই ঘটনায় নিহত মঞ্জুর আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী রুনা আক্তার, শ্বশুড়-শাশুড়ি, শ্যালকসহ ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

জানা যায়, শুক্রবার (২১ মে) দিনে দুপুরে ঈদগাঁও’র মাইজ পাড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী রুনা আক্তারের বাবা, মা, ভাই বোনসহ বেশ কয়েকজন মিলে মঞ্জুর আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। ঈদগাঁও থানার ওসি আবদুল হালিম জানান, ওই নির্মম নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নজরে আসে পুলিশের। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে শুক্রবার রাতেই নির্যাতনকারী স্ত্রী রুনা আক্তারসহ ৮ জনকে আটক করা হয়।

ওসি আরো জানান, এই ঘটনায় নিহত মঞ্জুর আলমের বড় ভাই শুক্রবার রাতে নির্যাতনের ঘটনায় একটি এজাহার দায়ের করেছিল। শনিবার দুপুরে মঞ্জুর আলম মারা যাওয়ায় সেটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত মঞ্জুর আলম দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়েছেন। প্রবাস জীবনে যা আয় করেছেন তা বাংলাদেশে অবস্থানরত তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী রুনা আক্তারের নামে পাঠাতেন। তাঁর স্ত্রী নিজের নামে কিনেছেন জমি। আর সেখানেই বানিয়েছেন বহুতল ভবনও। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কারণে ছুটিতে আসার পর আর বিদেশ যাওয়া হয়নি মঞ্জুর আলমের। এরই মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। স্বামীর সাথে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন স্ত্রী রুনা আক্তারের।

এক পর্যায়ে শুক্রবার (২১ মে) স্ত্রী রুনা আক্তার, তার বাবা-মা, ভাই-বোন মিলে দিন দুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে মঞ্জুর আলমকে নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় শনিবার দুপুরে মারা যান মঞ্জুর আলম।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!