প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

চট্টগ্রাম প্রতিদিনে গত ২৭ আগস্ট প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) হিসাব বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এটিএম সেলিম। তার প্রতিবাদপত্রটি হুবহু এখানে প্রকাশ করা হল—

‘গত ২৪/০৮/২০২২ তারিখ জনৈক আবুল কালাম, ফয়েসলেক আবাসিক এলাকা, ৯নং উত্তর পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম কর্তৃক দুদক বরাবরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে একটি চিঠি লিখা হয়। সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায় উক্ত ঠিকানাটি সম্পূর্ণ ভূয়া। আমি চ্যালেঞ্জ করছি এটি একটি বেনামি অভিযোগ। অথচ উক্ত বেনামী অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পূর্বে জনৈক আবুল কালাম নামে উক্ত ঠিকানায় কেউ আছে কিনা তা খুজে বের করা উচিত বলে আমি মনে করি।

উল্লেখ্য, গত ২৭/০৮/২০২২ তারিখে দৈনিক “চট্টগ্রাম প্রতিদিন” সহ বিভিন্ন পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমুলক এবং উক্ত সংবাদ জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং নিম্নে আমার বক্তব্য তুলে ধরছি।

নিয়োগ সংক্রান্ত: আমার নিয়োগ নিয়ে যে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি যথারীতি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারি ব্যবস্থাপক পদে যোগদান করি। আমার চাকুরীতে নিয়োগকালীন কোন সময়ে জনাব কামাল উদ্দিন বিপিসিতে সচিব কিংবা অন্য কোন পদে দায়িত্বে ছিলেন না। আমি এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করছি। তাছাড়া আমার নিয়োগ নিয়ে কোন সমস্যা থাকলে দীর্ঘ ২২ বছরের মধ্যে তা উত্থাপিত হতো।

মংলা অয়েল ইনস্টলেশন প্রকল্প সংক্রান্ত: মংলা অয়েল ইনস্টলেশন প্রকল্পটি বিপিসি’র অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হয়নি। উক্ত প্রকল্পটি ৩টি তেল বিপণন কোম্পানির অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হয়। ৩টি কোম্পানির মধ্যে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিঃ উক্ত প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান এবং পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিঃ এর ডিজিএম উক্ত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। বিপিসি’র পক্ষে বিপিসি’র পরিকল্পনা বিভাগ প্রকল্পের কাজ তদারকি করে থাকে। যেহেতু প্রকল্পটি ৩টি তেল বিপণন কোম্পানির অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে; সেহেতু উক্ত প্রকল্পের কোন হিসাব বিপিসি’র একাউন্টসেও অন্তর্ভূক্ত নাই। বিপিসি’র পরিকল্পনা বিভাগই বিল অনুমোদন নিতেন। হিসাব বিভাগ শুধুমাত্র ভাউচার প্রস্তুতের কাজে সহযোগিতা করেছে। প্রকল্পের নামে একটি পৃথক ব্যাংক হিসাব রয়েছে যেখানে ৩টি তেল বিপণন কোম্পানি টাকা জমা রাখতেন। ঠিকাদার বিলের সমস্ত পেমেন্ট প্রকল্প পরিচালক থেকে বুঝে নিতেন। বিপিসি’র তহবিল থেকে উক্ত প্রকল্পের কাজে এখনও কোন অর্থ ব্যয় করা হয়নি। যে সকল ভাউচার পাওয়া যায়নি সেগুলি ২০১৫ সালের ভাউচার। তখন আমি হিসাব বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এর দায়িত্বে ছিলাম না। তাছাড়া ভাউচার সংরক্ষণ করা মহাব্যবস্থাপক এর কাজ নয়। এটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দায়্ত্বি। সম্প্রতি সরকারি নিরীক্ষা মন্তব্যে প্রকল্পের যাবতীয় কাগজপত্র বিল/ভাউচার সংরক্ষণের দায়িত্ব প্রকল্প পরিচালকের বলে মন্তব্য করেন। তাই সরকারি নিরীক্ষা অধিদপ্তর প্রকল্প পরিচালক-কে প্রয়োজনীয় ভাউচার যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করার জন্য জবাব দিতে বলেছেন। প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা একটি সমন্বিত কাজ। এখানে প্রতিটি কাজে ব্যক্তিগতভাবে আমার নাম জড়ানো উদ্দেশ্যমুলক।

এসপিএম প্রকল্পের জমি সংক্রান্ত: ইস্টার্ণ রিফাইনারির লিঃ এর এসপিএম প্রকল্পের জমি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি বিপিসি’র পরিকল্পনা বিভাগ, প্রকল্প পরিচালক ও জেলাপ্রশাসক-কক্সবাজার এর তত্বাবধানে সম্পাদন হয়ে আসছে। এসপিএম প্রকল্পের জায়গার জমি দেখারও সুযোগ হয়নি আমার। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমি কোনদিন এসংক্রান্ত আলোচনায় কিংবা মিটিংয়েও ছিলাম না। তথাপি আমার নামে উদ্দেশ্যমুলকভাবে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে।

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিঃ এর ৩০০ কোটি টাকা অনিয়ম প্রসঙ্গে: স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিঃ এর একটি পরিচালনা পর্ষদ আছে যেখানে পরিচালক আছেন ৪জন। এছাড়া একজন প্রধান নির্বাহী আছেন। তারাই উক্ত কোম্পানির সবকিছুর দায়িত্বে আছেন। উক্ত পরিচালনা পর্ষদ এবং প্রধান নির্বাহীর পরিবর্তে বিপিসি’র মহাব্যবস্থাপক (হিসাব)-কে কোথায় ক্ষমতা দেয়া আছে তা বোধগম্য নয়। যে অটোমেশন নিয়ে লিখা হয়েছে সে অনুযায়ী যদি অটোমেশন এর দায়িত্ব কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিকট দেয়া হতো সেক্ষেত্রে বিপিসি’র টাকা ৮/১০ দিন বেসরকারি অটোমেশন প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে যেতো যা ক্ষতিকর ও ঝুকিপূর্ণ বিধায় দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১৩/০৫/২০১৯ তারিখের ২৮.০০.০০০০.০১৩.০১০.৩৪.১৯.৬৭ নং স্মারকমূলে বন্ধ করা হয়েছে। এতে আমাকে জড়িয়ে সংবাদ প্রচার উদ্দেশ্যমুলক বটে।

ফয়েজলেক এলাকায় ৬তলা ভবনের মালিক হওয়া প্রসঙ্গে: ফয়েজলেক আবাসিক এলাকায় আমার নামে ছয়তলা ভবনের মালিক হওয়ার যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উক্ত ভবনের ২য় ও ৩য় তলা ডুপলেক্স করে আমার শ্বশুরের পরিবার থাকেন। উক্ত ভবনের ৪র্থ তলা তার একমাত্র মেয়ে অর্থাৎ আমার স্ত্রীর নামে হেবামুলে লিখে দেন এবং বাকী ফ্লোরগুলি তিনি ভাড়া দেন। ফলশ্রুতিতে ৬তলা ভবনের মালিক হওয়ার যে তথ্য আমার বিরুদ্ধে প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমুলক।

চট্টগ্রাম শহরে একাধিক বাড়ি থাকা সংক্রান্ত: চট্টগ্রাম শহরে আমার একাধিক বাড়ি থাকার সংবাদটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। চট্টগ্রাম শহরে আমার নামে কোন বাড়ি নাই। আমার বাবা তার সকল ছেলেকে বাড়ি করার জন্য আলাদা আলাদা জমি লিখে দেন। তারা সেখানে যার যার বাড়ি করছেন। আমার বাবা আমার জন্যও একটি জমি বাড়ি করার জন্য রেজিষ্ট্রি হেবামুলে লিখে দেন। আমি বিয়ের ১ বৎসর পর থেকে শ্বশুর বাড়ীতে থাকি। আমার বাড়ি করার জন্য বাবার দেয়া ভিটিটি এখনও খালি পড়ে আছে। ফলে আমাকে জড়িয়ে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদটি উদ্দেশ্যমুলক ও আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার অপচেষ্টা।

চকবাজারে কোটি টাকার দোকান প্রসঙ্গে: আপনার পত্রিকায় প্রকাশিত মতে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের মার্কেটে ইডিইএস নামে আমার কোন কাপড়ের দোকান নেই।

ঢাকা চট্টগ্রামে বিপুল সম্পদ প্রসঙ্গে: আপনার পত্রিকায় প্রকাশিত মতে ঢাকার অভিজাত এলাকায় গুলশান ১, গুলশান ২, বনানী, ধানমন্ডি ও বারিধারায় আমার ১৬টি ফ্লাট আছে মর্মে পত্রিকার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ঢাকায় উল্লিখিত কোন এলাকায় আমার নামে কোন ফ্লাট নেই। এছাড়া চট্টগ্রামে হালিশহর, জিইসি মোড়, বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট ও জায়গা কিনার বিষয়গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমুলক। আমি এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করছি।

টাকা পাচার করে অষ্ট্রেলিয়ায় সেকেন্ড হোম করা প্রসঙ্গে: অষ্ট্রেলিয়ায় কিংবা বাংলাদেশে আবদুল করিম নামে আমার কোন বন্ধু নেই। সুতরাং আবদুল করিম নামে বন্ধুর নিকট টাকা পাচার/কিংবা অষ্ট্রেলিয়ায় বাড়ি করার প্রশ্নই উঠে না। এ বিষয়ে আমি নিদ্ধিধায় চ্যালেঞ্জ করছি।

পারিবারিক কাজে অফিসের গাড়ি ব্যবহার প্রসঙ্গে: আমি প্রাধিকার অনুযায়ী অফিসের গাড়ি ব্যবহার করে থাকি। প্রকাশিত সংবাদটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমুলক।

ব্যাংকে হাজার কোটি টাকার আমানত, তবু ঋণ প্রসঙ্গে: বিপিসি আমানত থাকা অবস্থায় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। গত ৭/৮ বছরের মধ্যে অদ্যবধি বিপিসি ব্যাংক থেকে কোন ঋণ নেয়নি। যেখানে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হয়নি, সেখানে ২৭৮ কোটি টাকা সুদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যমুলক এবং আমাকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করার অপচেষ্টা।

এছাড়া হোয়াটসআপে যোগাযোগের চেষ্টা প্রসঙ্গে: হোয়াটসআপে আমি অবশ্যই জবাব দিয়েছি এই বলে যে, “আমি মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি, আল্লাহ যেন যারা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এধরণের নোংরামি করছে তাদের হেদায়াত দান করেন।”

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!