পেটের দায়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সিএনজি চালকদের সড়কে অবস্থান

মাথার উপর তখন জৈষ্ঠ্যের সূর্যের খরতাপ। উত্তাপ ছড়াচ্ছে পিচ ঢালা পথটাও। তবুও স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মায়ের পেটে খাবার দিতে না পারা পরিবহন শ্রমিকরা বসে পড়েছে রাস্তায়।

বুকে ধরে থাকা কাগজে লিখা, ‘পরিবহন শ্রমিকেরা না খেয়ে মরছে’, ‘ত্রাণ চাই নয় গাড়ি চালাতে দাও’।

আবার এই বসে পড়ায়ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে তারা। চক দিয়ে গোল চিহ্ন এঁকে নিরাপদ দূরত্ব নির্ধারণ করেছে আগে। তারপর সেই চিহ্নের উপর একজন করে বসে সড়কে অবস্থান নেয় তারা।

সোমবার (১৮ মে) সকাল ৯ টায় নগরীর চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে টেম্পো ও সিএনজি অটোরিকশা চালকরা।

এতে অংশ নেয় সিএনজি অটোরিকশা চালকসহ পাঁচ শতাধিক পরিবহন শ্রমিক। পরে দুপুর ১২ টার দিকে চান্দগাঁও থানা পুলিশ এসে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

টেম্পো, অটোরিকশা চালক কল্যাণ সমিতি বাহির সিগন্যাল শাখার পরিবহন শ্রমিকেরা ত্রাণের দাবিতে এ বিক্ষোভ করে।

পরিবহন শ্রমিকরা জানায়, করোনা সংক্রমন ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধের ফলে তাদের আয়-রোজগার বন্ধ। কর্মহীন চালক হেলপারদের পরিবার ‘খেয়ে না খেয়ে’ দিনপার করছে। কিন্তু তাদের জন্য সরকার কোনো ত্রাণের ব্যবস্থা করেনি। তাই তারা পেটের দায়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাস্তায় নেমেছেন।

তাদের দাবি, তাদের গাড়ি চালাতে দেওয়া হোক, না হয় তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হোক।

দুপুরে চান্দগাঁও থানা পুলিশ এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে যখন সরিয়ে দিচ্ছিল তখন তারা পুলিশকে বলে, ‘ঈদের আগে যদি আমরা ত্রাণ না পাই তাহলে আবারো আন্দোলনে নামবো।’

টেম্পো, অটোরিকশা চালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মিন্টু চক্রবর্তী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রায় দুই মাস যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকেরা খেয়ে না খেয়ে দিনপার করছে। শ্রমিকদের পাশেকেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে শ্রমিকেরা না খেয়ে মরে যাবে। আমরা ঈদের আগে ত্রাণ চাই, নয়ত আমাদের গাড়ি চালানোর সুযোগ দেওয়া হোক। আমরাতো না খেয়ে মরে যেতে পারিনা।’

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, ‘সিএনজি চালকদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেই। আমরা তাদের বলেছি তাদের দাবি যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে। সড়ক অবরোধ করে মানুষের দুর্ভোগ করা ঠিক নয়। পরিবহন শ্রমিকেরা আমাদের কথায় অবরোধ তুলে নেন।’

সিএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!