পেখম খুলে ময়ূর নাচছে চকরিয়ার সাফারি পার্কে, দেখেই মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

গ্রীষ্ম যখন কড়া উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারদিকে, তখন পেখম খুলে নাচছে সুবেশী ময়ূর। এমন দৃশ্য দেখা গেল কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। দর্শনার্থীরা এতেই মুগ্ধ হচ্ছেন দারুণ।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ঢুুকে হাতের বাম পাশে কয়েক গজ হেঁটে গেলেই দেখা মিলবে ময়ূরের বেষ্টনী। এমন সময় দেখা মেলে একটি ময়ূর পেখম খুলে আপন মনে নাচানাচি করছে। তা দেখে পার্কে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা মোবাইলে ছবি তোলায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ময়ূরের পেখম খুলে নাচানাচির দৃশ্য তো আর সবসময় দেখার সৌভাগ্য হয় না!

সাফারি পার্কের ওই বেষ্টনীতে ময়ূর রয়েছে আরও অনেক। তবে দল ছেড়ে এসে হঠাৎ কী মনে করে একটি ময়ূর পেখম খুলে নৃত্য করছে তা অনেকেরই অজানা।

চট্টগ্রাম থেকে পার্কে ঘুরতে এসেছেন মনিকা বিশ্বাস। তিনি বলেন, চকরিয়ায় আমার আত্মীয় রয়েছে। আমার স্বামী, সন্তান ও বোনসহ বেড়াতে এসেছি এখানে। সে সুবাদে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আসা। এখানে এসে অনেক পশু-পাখি দেখেছি। তবে ময়ূরের পেখম খুলে নাচ দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছি। এভাবে পেখম খুলে ময়ূরের নাচার দৃশ্য টিভি বা অন্যান্য মাধ্যমে দেখতে পেলেও সরাসরি কখনও দেখি নাই। সত্যিই অভিভুত হয়েছি।

চকরিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ২০০৭ সালের ১৫ মার্চ পাবনা থেকে প্রথম একটি ময়ূর পার্কে আনা হয়। একই বছরের ২৪ মার্চ একটি পুরুষ ময়ূর চট্টগ্রাম থেকে কিনে পার্কে আনা হয়। একই বছরের চাঁদপুরের কাকড়া মানিকের বাসা থেকে ১১টি ময়ূর উদ্ধার করা হয়। পরে এসব ময়ূর পার্কে আনা হয়। এরপর একই বছরের ১৩ এপ্রিল যৌথ বাহিনী নরসিংদী থেকে দুটি ময়ূর জব্দ করে পার্কে পাঠান।

তিনি বলেন, ২০১১ সালের ১ জুন সিলেটের শ্রীমঙ্গল থেকে একটি পুরুষ ময়ূর, একই বছরের ১৯ জুলাই যমুনা ইকো পার্ক থেকে আরেকটি পুুরুষ ময়ূর পার্কে পাঠানো হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের হালিশহর রেলগেট এলাকা থেকে ১টি পুরুষ ও ১টি মহিলা ময়ুর উদ্ধার করে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, সবমিলিয়ে ১৯টি ময়ূর পার্কে ছিল। এর মধ্য থেকে একটি ময়ূর যমুনা ইকোপার্কে পাঠানো হয়। এরপর ২০০৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে চারটি ময়ূরের মৃত্যু ঘটেছে।

বর্তমানে পার্কে ১৪টি ময়ূর রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি পুরুষ এবং ৭টি মহিলা ময়ূর। ইতোমধ্যে কয়েকটি মহিলা ময়ূরের ডিম দেওয়ার সময় হয়ে এসেছে। আশা করা হচ্ছে, এই মাসের মধ্যে আরও কিছু ময়ূরের বাচ্চা পাওয়া যাবে।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ময়ুররা সাধারণ মার্চ-এপ্রিল ও মে মাসে পুরুষ ময়ূররা পেখম খুলে রাখে। মুলত পুরুষ ময়ূররা মহিলা ময়ূরদের আকৃষ্ট করার জন্য পেখম খুলে নাচতে থাকে। আর মহিলা ময়ূরদের পেখম থাকে না। বর্ষাকালে ময়ূররা পেখমু খুলে নাচে এটা আমাদের ভুল ধারণা। বর্ষা মৌসুমে সাধারণত ময়ূরদের পেখম শরীর থেকে ঝরে পড়ে যায়। বর্ষা শেষ হলে আবারও পেখম উঠতে শুরু করে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!