পেকুয়ায় চাল নিয়ে চালবাজি, শ্রেণিকক্ষে চালের স্তুপ

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে পুলিশ ১৫ মেট্রিকটন (৩০০ বস্তা) চাল জব্দ করেছে।

গোপনে সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া হোসনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ৩০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম চাল উদ্ধারের সত্যতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকে ১৫ টন চাল উদ্ধারের ঘটনায় পেকুয়াজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ওসি বলেন, উদ্ধারকৃত চালভর্তি বস্তাগুলো রাত সোয়া ৩টা পর্যন্ত পুলিশ পাহারায় ছিল। চালগুলোর কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হোছনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে পেকুয়া থানা পুলিশ তাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে তার স্কুলে রাখা ১৫ মেট্রিক টন চাল তার জিম্মায় দেন।

প্রধান শিক্ষক আরও জানান, রাত ৯টার দিকে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচী স্কুলের নাইট গার্ড থেকে চাবি নিয়ে চালের বস্তাগুলো স্কুলের ভেতরে রাখেন। স্কুলে চালের বস্তা রাখার বিষয়ে তিনি আগে কিছুই জানতেন না।

বারবাকিয়া হোসনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচী জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম তার বিশেষ বরাদ্দ থেকে বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য ১১৭ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ওই মাঠ ভরাট কাজের পিসি হচ্ছেন তিনি। জব্দকৃত চালসমূহ ওই প্রকল্পের বলে দাবি করছেন ওয়াহিদ।

এর আগে চাল উত্তোলন করে প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। গতকালও ১৫ টন চাল খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করে বিদ্যালয়ে এনে রাখা হয়েছে।

তবে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, পেকুয়া পিআইও অফিস থেকে ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচীকে চাল উত্তোলনের জন্য গতকাল ২৬ এপ্রিল কোন ডিও দেওয়া হয়নি। তিনি চালগুলো সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

জানা গেছে, জব্দকৃত চাল বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দু’জন মেম্বারকে জিম্মায় দিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও জিম্মা নামায় স্থানীয় একজন যুবলীগের নেতাকে সাক্ষী করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, সব তথ্যপ্রমাণ যাচাই শেষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হবে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে পেকুয়া থানায় নিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পেকুয়ার ইউএনও সাঈকা সাহাদতের কাছে জানতে চাইলে তিনি চাল উদ্ধারের বিষয়ে অবগত নন বলে জানান। তিনি বলেন, যদি চালগুলো সরকারি কোন চাল হয়ে থাকে, সে চাল নিয়ম মেনে বরাদ্দ হয়েছে কিনা, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এসএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!