পেঁয়াজের দুয়ার খুলেছে ভারত, কমছে ঝাঁজ

অস্থিরতার পর বৃহস্পতিবার থেকে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সেই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, শিগগিরই দাম নাগালে আসবে। কারণ ভারত থেকে পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে পেয়াঁজ আমদানির বড় বাজার ভারত। কিন্তু ভারতে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ে। ফলে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। চলতি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। ফলে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় কমতে শুরু করেছে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম।

কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে নিষেধাজ্ঞার প্রায় পাঁচ মাস পর আবারও পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বাম্পার ফলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার দেশটির খাদ্য ও ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, গত বছরের তুলনায় মার্চে ৪০ লাখ টন বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হলে কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বেশিরভাগ খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ রুপিতে নেমে এসেছে। বাম্পার ফলনের কারণে দাম আরও কমতে পারে। এ সময় রপ্তানি করলে কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। ভারতের বাজারেই সে সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ রুপি। ভারত সরকার মজুতের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে।

বাংলাদেশ পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ওপরই নির্ভরশীল। ফলে দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে। ২৫-৩০ টাকা কেজির পেঁয়াজে ডাবল সেঞ্চুরি হয়।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর বাংলাদেশে এই পণ্যের বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। এই নিত্যপণ্যের দাম প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় উঠে যায়। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার চীন, তুরস্ক, মিসর, মিয়ানমার থেকে আমদানি করে বাজার সামলানোর চেষ্টা চালালেও পেঁয়াজের দর এখনও কেজিপ্রতি ১০০ টাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পেঁয়াজ আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি আফসার উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্রসহ কয়েকটি প্রদেশে সাম্প্রতিক বন্যার অজুহাতে পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বাড়ানোয় বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ে।

খাতুনগঞ্জ পেঁয়াজ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলায় আমাদের পাইকারি বাজারেও পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। চীনের পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি পেয়াঁজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। যদিও কয়েকদিন আগেও পাইকারিতে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল পেয়াঁজ। কিন্তু এখন বিক্রিও তেমন হচ্ছে না।

এএস/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!