পুলিশ বক্সে বিস্ফোরিত বোমা লোহাগাড়া থেকে নিয়ে আসে জঙ্গিরা

জিএমবি’র ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট পুলিশ বক্সে দুই মাস আগে বোমা হামলার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ তিন ‘নব্য জেএমবি সদস্যকে’ গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

নগরীর বাকলিয়া ডিসি রোডের একটি বাসা থেকে রোববার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. সাইফুল্লাহ (২৪), মো. এমরান (২৫) ও আবু ছালেহ (২৫)। তাদের মধ্যে এমরান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অষ্টম সেমিস্টার এবং আবু ছালেহ একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের টেক্সটাইল অনুষদের শিক্ষার্থী। সাইফুল্লাহ চকবাজার একটি কম্পিউটারের দোকানের কর্মচারী।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার পলাশ কান্তি নাথ জানিয়েছেন, বাকলিয়া ডিসি রোডের একটি বাসা থেকে রোববার ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইটের পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল ৭ জন। হামলার আগের দিন এদের কয়েকজন লোহাগাড়া থেকে বাকলিয়া ডিসি রোডে সাইফুল্লার বাসায় আসে।

পুলিশ বক্সে বিস্ফোরিত বোমাটিও লোহাগাড়া থেকে নিয়ে আসা হয়েছে জানিয়ে পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ‘হামলার আগের দিন লোহাগাড়া থেকে আসার সময় বোমাটি নিয়ে আসে তারা। লোহাগাড়াতেই একটা গুদামে ইউটিউব দেখে দেখে বোমাটি বানিয়েছিল তারা।’

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার পলাশ কান্তি নাথ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, এরা মূলত স্লিপার সেল স্টাইলে কাজ করে। এদের নেতা কে এখন পর্যন্ত তা বলতে পারছিনা। বোমা হামলায় স্বশরীরে ৭ জন অংশ নিলেও এই দলের ১৪/১৫ জন সদস্যের নামের তালিকা এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে আছে। যাদের মধ্যে ৩ জনকে আমরা আটক করেছি। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ বক্সে রেখে যাওয়া বিস্ফোরক দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল বলেও এসময় জানান পলাশ কান্তি নাথ।

হামলার পর আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে এই দলটিকে চিহ্নিত করে পুলিশ। পুলিশ বলছে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় পর্যায় থেকেই এই দলটি সংগঠিত হয়েছে। যার প্রায় সকল সদস্যই সাতকানিয়া লোহাগাড়া এলাকার। এই দলটির সাথে বড় কোনো জঙ্গী সংগঠনের যোগাযোগ আছে কিনা সেটিও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয় পুলিশ।
স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠিত হওয়া এই দলটি পুলিশকে লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করেছে। পুলিশি তল্লাশি ও নজরদারি এড়িয়ে বিস্ফোরণ করার জন্যই তারা দুই নম্বর গেইট পুলিশ বক্সকে বেছে নিয়েছিল। কারণ ডিসি রোডের যে বাসায় তারা সংগঠিত হয়েছিল সেখান থেকে ২ নম্বর গেটে আসা পর্যন্ত কোন তল্লাশির মুখোমুখি হতে হয়না এমনটাই দাবি পুলিশের।

প্রসঙ্গত গত ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে দু’জন সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!