পুলিশের মানবিক মুখ দেখছে শহর চট্টগ্রাম
অসহায় রোগীকে মমতায় সারিয়ে তুলছে পুলিশ
আজ কিছু মহৎ হৃদয়ের কথা বলি। মানবতার ফেরিওয়ালার গল্প বলি।
ছবিগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তোলা। মানুষগুলো নামহীন, পরিচয়হীন। সড়ক ওদের ঘর, ফুটপাত ওদের বিছানা। এখানেই খায়, এখানেই ঘুমায়, অসুস্থ হলে এখানেই পড়ে রয়। এদের মধ্যে একজনের পা জুড়ে ঘা, পুঁজ পড়ে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ধীরে ধীরে যখন সে পঙ্গুত্বের অপেক্ষা করছিল তখনই আগমন একদল দেবদূতের। সেই দেবদূতেরা তাকে সারিয়ে তুলে। এখন সে হাঁটতে পারে!
শওকত, মাইন, হান্নান, ইয়াছিন, রবিউল, এমরান, মাহবুব— আমাদের পুলিশ পরিবারেরই সদস্য ওরা। একই পেশা, একই ইউনিফর্ম হলেও ওদের কাজ ভিন্নতর, মানবিকতায় উন্নততর। আমরা সবসময়ই অপরাধীদের পেছনে ছুটলেও ওদের চোখ খোঁজে ফুটপাতের সহায়হীন বেওয়ারিশ মানুষগুলোকে। অসহায় মানুষগুলোর পাশে ওরা দাঁড়ায় সহায় হয়ে।
মানবসেবার মানসিকতাই তাদের একমাত্র পুঁজি। তাই তো শুধুমাত্র একটা ফার্স্ট এইড বক্স নিয়েই তারা ঘোরে পথে পথে। তাদের কাছে রোগ নয়; রোগীই আসল। তাই তো আধমরা পাগলটার পাশ কেউ না ঘেঁষলেও ওরা তাকে সুস্থ করে তুলেছে পরম মমতায়। পুঁজের দুর্গন্ধ বের হওয়া ভবঘুরেটার গোঙানির শব্দ কেউ ভ্রুক্ষেপ না করলেও পাশ কাটিয়ে যায়নি মহৎপ্রাণ মানুষগুলো। আর পা জুড়ে ঘা হওয়া বৃদ্ধার কান্না থামাতেও ছুটে এসেছেন মানবতার এই ফেরিওয়ালারা।
এভাবেই পথে ঘুরে ঘুরে সারিয়ে তুলেছেন ৩০ অসহায় রোগীকে! ভাইরালের এই জমানায় এ ধরনের একটি ঘটনাই সেলিব্রেটি হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু সে পথে হাঁটেনি শওকত ও তার টিম।
তাদের মহান এই কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে সিএমপি। তাদের এই অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম পেয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক মোড়ক। তাদের কাজে মুগ্ধ আমাদের অভিভাবক মো. মাহাবুবর রহমান বিপিএম, পিপিএম স্যারও। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সিএমপিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে ‘মানবিক ইউনিট’। দুস্থ, অসহায়দের যেকোন মানবিক সাপোর্ট দেবে এই ইউনিট।
মোহাম্মদ মহসীন: ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোতোয়ালী থানা, চট্টগ্রাম